ন্যাটোর উচ্চ সামরিক প্রস্তুতির বার্তা

এবারের ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন থেকে বিশ্বকে নতুন বার্তা দেওয়া হয়েছে। আর সেটি হচ্ছে, উচ্চ সামরিক প্রস্তুতি। যা ন্যাটোর বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। সরঞ্জাম বৃদ্ধির পাশাপাশি সেনার সংখ্যা ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ করার সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ম্যাথিউ ব্রাইজা মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর পরিবর্তনশীল কৌশলগত ধারণার সাথে সম্পর্কিত। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ন্যাটো মহামসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯৯ সালে ন্যাটোর প্রথম সম্প্রসারণ কার্যক্রম শুরু হয়, যা রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করে। ব্রাইজা বলছেন, অতীতে ন্যাটোর কৌশলগত ধারণাটি ছিল রাশিয়ার হাত থেকে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়া রক্ষা করা। এখন ন্যাটোর নতুন ভাবনা রাশিয়ার হাত থেকে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো রক্ষা করা এবং রুশ শক্তির প্রতিরোধ করা।

ব্রাইজা বলছেন, এ কারণেই ন্যাটো নাটকীয়ভাবে বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়েছে, যা উচ্চ সামরিক প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করে। যাতে রাশিয়া বুঝতে পারে, ন্যাটো অঞ্চলে আক্রমণ করে কোনো দেশকে দখল কিংবা জয় করা সম্ভব না।

কূটনৈতিক কর্মজীবনে ব্রাইজা আজারবাইজানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি একটি এস্তোনিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্কের নেতৃত্ব দিতেন। সেই সময়ে তিনি লক্ষ্য করেছিলেন, রাশিয়া যে কৌশল ব্যবহার করে ক্রিমিয়া দখল করেছিল, একই কৌশলে বাল্টিক অঞ্চলগুলোর দিকে নজর দিতে চায়। কারণ ক্রিমিয়া দখল করার সময় ন্যাটোর কোনো কৌশল কাজে আসেনি।

ব্রাইজা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ন্যাটো সম্মেলনের পর পুতিন হয়তো ভাবছেন, ন্যাটোর দেশগুলো পাল্টা হামলার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। কাজেই পূর্ব লাটভিয়া, এস্তোনিয়া বা লিথুয়ানিয়ার ক্ষুদ্র অঞ্চলগুলো নিয়ে পারমাণবিক যুদ্ধের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে ন্যাটোর শক্তি বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে পুতিনকে অবশ্যই দুইবার চিন্তা করতে হবে। কারণ ন্যাটো তার বাহিনীকে 'উচ্চ প্রস্তুতির' ওপর রেখেছে।

তিনি মনে করেন, এখন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চলছে। প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো ইউরোপে বাহিনীকে রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। যেটি শীতল যুদ্ধের পর ন্যাটোর সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ। কৃষ্ণসাগর থেকে আর্কটিক সার্কেল পর্যন্ত ১০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান টহল দিচ্ছে। ন্যাটো তার বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য পুরো প্রস্তুত করে রেখেছে।