ভেনিসকে রক্ষায় ভিন্ন রকমের উদ্যোগ, গুনতে হবে অর্থ

ইতালির শহর ভেনিসকে দর্শনার্থীর আধিক্য থেকে মুক্ত করতে ভিন্ন রকম উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সিটি কাউন্সিল। আগামী বছরের শুরু থেকে শহরটিতে ঢুকতেই টিকিট কাটতে হবে, নয়তো বড় অংকের জরিমানা করা হবে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

ভেনিস নগরী

ভেনিস সিটি কাউন্সিল গত শুক্রবার জানায়, আগামী বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে। তখন থেকে এ শহরে প্রবেশ করতে হলে পর্যটকদের ১০ ইউরো গুনতে হবে। তবে যে সকল পর্যটক ভেনিসে রাতযাপন করবেন, ৬ বছরের কম বয়সী শিশু, হলিডে হোমের মালিক, স্থানীয়দের সাথে বাস করেন, ছাত্র-যাত্রী এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি বিভাগ এ সিদ্ধান্তের আওতামুক্ত থাকবে।

ভেনিস শহরটি দীর্ঘদিন ধরেই পর্যটকদের আধিক্যে ভারাক্রান্ত। বিশেষ করে যারা কয়েক ঘণ্টার জন্য এ শহরে ঢু মারেন, তাদেরই বেশি যন্ত্রণার বিষয় বলে মনে করছে শহরবাসী ও শহর কর্তৃপক্ষ। আর সে কারণেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ভেনিসে পর্যটকদের ভীড়

ভেনিসের সিটি কাউন্সিলর সিমোন ভেনটুরিনি গণ পর্যটন নিয়ন্ত্রণের নতুন ব্যবস্থাকে একমাত্র উপায় অভিহিত করে বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশ্বে আমরাই প্রথম এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সাথে কাউন্সিলর গণ পরিবহন, মিউজিয়াম ইত্যাদি ক্ষেত্রেও মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে জলফেরির টিকিটের দাম ৭.৫০ ইউরো থেকে বাড়িয়ে ৯.৫০ ইউরো করা হবে এবং সেন্ট মার্কস মিউজিয়ামে প্রবেশ টিকিটের মূল্য ২৫ ইউরো থেকে ৩০ ইউরো করা হবে।

ভেনটুরিনি বলেন, বিভিন্ন উৎসবের সময় শহরটি পুরোপুরি বন্ধ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। সে সময়ও পর্যটকরা আসতে পারবেন, তবে একটু বেশি অর্থ খরচ করতে হবে।

তিনি আরও জানান, টিকিট বুকিং হবে অনলাইনে এবং বিষয়টি তদারকি করতে শহরের বিভিন্ন গলি, ব্রিজে টহল দল থাকবে। টিকিট ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তিদের ৫০ থেকে ৩০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

পানির ওপর ভেসে থাকা শহর হিসেবে পরিচিতি ভেনিস সব সময়ই পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। কিন্তু শহরটিকে ব্যয়বহুল ও বাসিন্দাদের কম অতিথিপরায়ণ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য পর্যটকদের আধিক্যকেই দায়ী করা হয়। শহরটির বাসিন্দার সংখ্যা গত ৩০ বছরে ২৬ হাজার কমে গেছে।

এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে শহর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে তথাকথিত ‘হিট অ্যান্ড রান ট্যুরিস্ট’দের নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল, যারা শহরে মাত্র কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করেন। ২০১৯ সাল থেকেই ভেনিসের প্রবেশের ক্ষেত্রে মূল্য বসানোর চিন্তা করা হচ্ছিল। তবে কোভিডের কারণে তার বাস্তবায়ন পিছিয়ে যায়।