সমতায় ফিরল জিম্বাবুয়ে

ব্যক্তিগত কারণে দেশে ফিরে গেছেন মুশফিকুর রহিম। চোট শঙ্কায় থাকা তামিম ইকবাল বেছে নিয়েছেন দুই মাসের নির্বাসনের পথ। তাদের ছাড়াই প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হেসেখেলে জিতেছে বাংলাদেশ দল। এমনিতে সিরিজে লিড। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমান ও লিটন দাসকে খেলানোর প্রয়োজন মনে করেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি

সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল। অনিয়মিত একাদশ নিয়ে খেলতে হেরে বসল বাংলাদেশ। আজ হারারে স্পোর্টিং ক্লাবে জিম্বাবুয়ের কাছে টাইগাররা হেরেছে ২৩ রানে। জিম্বাবুয়ের ১৬৬ রানের জবাব দিতে নেমে ম্যাচের এক বল বাকি থাকতে ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতায় ফিরল জিম্বাবুয়ে। আগামী রোববার একই ভেন্যুতে অলিখিত ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।

যথারীতি এদিনও টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করে স্বাগতিকদের টপ অর্ডার। নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট খোয়ালেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করেননি জিম্বাবুইয়ানরা; বরং রান তুলেছে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে। তবে আসল ঝড়টা উঠেছে ওপেনার ওয়েসলি মাধভেরের ব্যাটে।

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি

এই ওপেনারের হাফসেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে দলীয় সংগ্রহ দেড় শ ছাড়ায় স্বাগতিক শিবির। ৫৭ বলে ৭৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেছেন মাধভেরে। তিনি ইনিংস সাজিয়েছেন পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায়। মাধভেরে যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকেই শুরু করেছেন রায়ান বার্ল। শেষ দিকে ঝড় উঠে তার ব্যাটে।

১৯ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ৩৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে অজেয় থাকেন বার্ল। এ ছাড়া ডিয়ন মেয়ার্স ২১ বলে ২৬ রানে আউট হন। নয় বলে ১৪ রান এসেছে রেজিস চাকাবার ব্যাট থেকে। জিম্বাবুয়ের পতন হওয়া ছয় উইকেটের তিনটি নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। একটি করে শিকার মেহেদি হাসান ও সাকিব আল হাসানের।

জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ধস পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা দুই ওপেনারের একজনও আজ যেতে পারেননি দশকের ঘরে। দলের ১৭ রানে বিদায় নেন দুজনই। বিপদে পড়ে টাইগাররা। শুরুর জোড়া ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ।

৬৮ রানের মধ্যে ছয় উইকেট খুইয়ে হারের চোখ রাঙানিতে পড়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এ সময়ে সাজঘরে ফিরে যান সাকিব, মেহেদি হাসান, মাহমুদউল্লাহ ও নুরুল হাসান। এই চতুষ্টয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৯ বলে ১৫ রান করেন মেহেদি। সাকিব ফিরেছেন ১০ বলে ১২ রান করে। মাহমুদউল্লাহ ছয় বলে চার রানে আউট হন।

ওপেনার নাঈম আট বলে পাঁচ রানে আউট হন। সাত বলে আট রান এসেছে আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। আর আট বলে নয় রানে বিদায় নিয়েছেন সোহান। একদিকে উইকেট পতনের মিছিল অন্যদিকে আস্কিং রেটের চাপ। সব বোঝা যেন তরুণ আফিফ হোসেন ও অভিষিক্ত শামীম হোসেনের কাঁধে গিয়ে পড়ে।

এ যাত্রায় দুজনই অবশ্য লড়াই করেছেন। আফিফ মন্থর গতিতে ব্যাট চালিয়ে উইকেট আগলে রাখার চেষ্টা করেছেন। আর ঝড় তোলেন শামীম। লড়াইয়ে ফেরার স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। কিন্তু আস্কিং রেটের চাপে শেষ হয়ে গেল তার প্রত্যাবর্তনের ইনিংস। লুক জঙ্গীর বলে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার হাত ক্যাচ তুলে দেন শামীম। খানেক বাদে তার পথ ধরলেন আফিফও।

২৫ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৪ রানে আউট হন আফিফ। শামীম ১৩ বলে ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনটি চার ও দুই ছক্কায়। ১৮তম ওভারে সাইফুদ্দিন এসেই ছক্কা হাঁকান। এরপরই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেন তিনি। ১৫ বলে ১৯ রানে আউট হন এই অলরাউন্ডার। তাসকিন আট বলে পাঁচ রানে ছাড়েন উইকেট।

বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে ফেরান ব্লেসিং মুজারাবানি। এরপর তিন উইকেট নিয়ে টপ মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন মাসাকাদজা। মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেওয়া টেন্ডাই চাতারা নিয়েছেন তিন উইকেট। তিন উইকেট নিয়ে লোয়ার অর্ডার উড়িয়ে দিয়েছেন জঙ্গী। বোলারদের সম্মিলিত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছে দেড় শ’র আগেই। তবে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা মাধভেরে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।