টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১: যা জানা দরকার

শুরু হয়ে গেল চার-ছক্কার রোমাঞ্চকর যুদ্ধ। ওমান-পাপুয়া নিউগিনি ম্যাচ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। ১৬ দলের এই বিশ্বকাপের নীতিমালা এবং মৌলিক বিষয়াদি জেনে নেওয়া যাক।

আগামী ১৪ নভেম্বর দুবাইতে টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে মোট ১৬টি দল। আট দল খেলছে বাছাইপর্ব। ১২টি দল নিয়ে আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে মূলপর্বের খেলা।

এবারের বিশ্বকাপের স্বাগতিক ভারত। গত জুনে ভারতে করোনার প্রকোপ বাড়ায় বিশ্বকাপের ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত আসে। মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশ ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্থানান্তর করা হয় প্রতিযোগিতার ম্যাচগুলো। বাছাইপর্বের ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে তিনটি ভেন্যুতে। ওমানের মাস্কট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ও আবুধাবিতে। টুর্নামেন্টের অন্য ভেন্যু দুবাই।

এবারের বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রানার্সআপ দল পাবে আট লাখ ডলার। সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুই দল পাবে চার লাখ ডলার করে।

প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) প্রযুক্তি। প্রতিটি দল এক ইনিংসে দুটি অসফল রিভিউ নিতে পারবে। সফল রিভিউ দুইয়ের অধিক নিতে পারবেন খেলোয়াড়রা।

টুর্নামেন্ট দুই ভাগে বিভক্ত। বাছাইপর্বের আটটি দল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে খেলবে প্রথম রাউন্ড। দুই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল টিকিট পাবে সুপার টুয়েলভের টিকিট। এই রাউন্ডে ছয়টি করে দল খেলবে রবিন লিগ রাউন্ড।

প্রথম রাউন্ডের খেলায় 'এ' গ্রুপে আছে- শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং নামিবিয়া। 'বি' গ্রুপে আছে বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি এবং ওমান। গ্রুপের প্রতিটি দল পরষ্পরের মুখোমুখি হবে। দ্বিতীয় রাউন্ডের দুই গ্রুপের দলগুলোও একইভাবে রবিন লিগ রাউন্ড পদ্ধতিতে খেলবে।

(নির্ধারিত সময় পর্যন্ত) র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আট দল সরাসরি খেলবে সুপার টুয়েলভ। এখানে গ্রুপ-১ এ আছে- ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে বাছাইয়ের 'এ' গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং 'বি' গ্রুপ রানার্সআপ। গ্রুপ-২ এ আছে- ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তান। এখানে যুক্ত হবে বাছাইয়ের 'বি' গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও 'এ' গ্রুপ রানার্সআপ।

টুর্নামেন্টে মোট ৪৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। তন্মধ্যে বাছাইপর্বের ম্যাচ ১২টি এবং ৩০টি 'সুপার টুয়েলভে'র ম্যাচ রয়েছে। সুপার টুয়েলভের দুই গ্রুপের শীর্ষ চার দল উঠবে সেমিফাইনালে। দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে প্রতিযোগিতার সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আরব আমিরাতের তিনটি ভেন্যু- শারজাহ, আবুধাবি ও দুবাইতে।

প্রতিটি জয়ী দল পাবে দুই পয়েন্ট। ম্যাচ পরিত্যাক্ত হলে দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট সমহারে বণ্টন করা হবে। রাউন্ড উন্নীতের ক্ষেত্রে একাধিক দলের পয়েন্ট সমান হলে পর্যায়ক্রমে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জয় সংখ্যা, নেট রানরেট এবং মুখোমুখি লড়াইয়ের ফল।

ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভার অনুষ্ঠিত হবে। সুপার ওভারেও যদি সমতা না ভাঙে তাহলে জয়ী দল নির্ধারণের আগ পর্যন্ত সুপার ওভার চলতেই থাকবে। আবহাওয়া বা কোনো কারণে যদি সুপার ওভার আয়োজন সম্ভব না হয় তাহলে দুই দল একটি করে পয়েন্ট পাবে।

বৈরি আবহাওয়ার কারণে সেমিফাইনাল আয়োজন করা না গেলে সুপার টুয়েলভের শীর্ষ দল ফাইনালে উঠবে। একইভাবে যদি ফাইনালও আয়োজন না করা যায় তাহলে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হবে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের জন্য একদিন রিজার্ভ ডে থাকবে।

তবে প্রথম বা দ্বিতীয় রাউন্ডের কোনো ম্যাচের জন্য রিজার্ভ ডে থাকবে না। প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচগুলো নির্ধারণ করতে হলে দুই দলের ইনিংস অন্তত পাঁচ ওভার করে হতে হবে। আর সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের ক্ষেত্রে দুই দলের ইনিংস অন্তত দশ ওভার করে হতে হবে।

এবারের বিশ্বকাপের বড় একটা সৌন্দর্য্য হচ্ছে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা। শিরোপা জেতার সম্ভাবনা আছে কয়েকটি দলের। নির্দিষ্ট করে ফেভারিট খুঁজে নেওয়া মুশকিল।

বিশ্বকাপে দর্শক প্রবেশের অনুমতি থাকছে। এক্ষেত্রে গ্যালারি পূর্ণাঙ্গ হবে না। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার ওপর নির্ভর করে তা নির্ধারণ করা হবে। ওমানের ম্যাচগুলোতে তিন হাজারের বেশি দর্শক প্রবেশ করবে না।

তবে প্রত্যেক টিকিটধারী দর্শকের টিকা সনদ (দুই ডোজ) থাকা বাধ্যতামূলক। আরব আমিরাত অংশের ম্যাচগুলোর জন্য ৭০ শতাংশ গ্যালারি ভর্তি করার সুযোগ থাকবে। প্রতিটি ম্যাচের গ্যালারির দর্শককে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।