জার্মানির ইতিহাস পাল্টে দিল ইংল্যান্ড

এবারের মেয়েদের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে শুরু থেকেই ইংল্যান্ডের গায়ে মোড়ানো ছিল ফেভারিটের তকমা। আসরজুড়ে নামের প্রতি সুবিচার করে খেলেছে তারা। ইংলিশ মেয়েদের যত ভয় ছিল জার্মানিকে ঘিরে। সেটা কেবল প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সফল দল, এ কারণে নয়। জার্মান মেয়েরা যে ফাইনালে হারে না! আটবার ফাইনাল খেলে প্রতিবারই শিরোপা জিতেছে তারা।

ইতিহাস পাল্টে দিলেন ইংল্যান্ডের মেয়েরা

অবশেষে ইতিহাস পাল্টে দিলেন ইংল্যান্ডের মেয়েরা। রবিরাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অতিরিক্ত সময়ের গোলে জার্মানদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো ইংলিশরা। জয়ের ব্যবধান ২-১। দুর্দান্ত এই জয় দিয়ে ইংল্যান্ডের ৫৬ বছরের অপেক্ষা ঘুচল। সেটা হ্যারি কেন-রুটদের সৌজন্যে নয়, ইংলিশ মেয়েরা সাড়ে পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন।

ফাইনালে অবশ্য আগেও উঠেছিল ইংল্যান্ড। ১৯৮৪ সালে মেয়েদের প্রথম ইউরো টুর্নামেন্টের টাইব্রেকারে সুইডেনের কাছে হেরে হৃদয় ভাঙে তাদের। ২০০৯ সালে তো ফাইনালে জার্মানির কাছে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত হতে হয়েছে ইংলিশদের। ১৩ বছর আগের সেই প্রতিশোধটা এবার নিল তারা। প্রতিযোগিতার ৩৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ফাইনালে হারলেন জার্মান মেয়েরা।

ফাইনালের প্রথমার্ধ কেটেছে গোলখরায়। দ্বিতীয়ার্ধে জমে ওঠে লড়াই। ৬২ মিনিটে গোল করে স্বাগতিক দর্শকদের উচ্ছ্বাসে ভাসান ইলা টুন। ১৭ মিনিট পর লিনা ম্যাগুইলের গোলে সমতায় ফেরে জার্মানি। নির্ধারিত সময় শেষে স্কোর লাইন দাঁড়ায় ১-১। মহারণ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। সেখানেই বাজিমাত স্বাগতিকদের। ১১০ মিনিটে জয়সূচক গোল করেন ক্লোয়ি কেলি।

এই জয়ে ফাইনালে হারের বৃত্ত ভাঙল ইংল্যান্ড। তৃতীয়বারের চেষ্টায় জিতল স্বপ্নের ইউরো। ইংল্যান্ড নারী ফুটবলের ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা। আর ১৯৬৬ সালের পর বড় কোনো সাফল্য পেল দেশটি। তাদের শেষ সাফল্যটি এসেছিল বিশ্বকাপে। জিওফ হার্স্ট-ববি চার্লটনরা দেশকে উপহার দেন সোনালি ট্রফি। এরপর আর শিরোপা জেতা হয়নি ইংল্যান্ডের কোনো দলের।

গত বছর অবশ্য পুরুষদের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল কেন-ম্যাগুইরোদের ইল্যান্ড। ম্যাচে আগে গোল করে উৎসবের প্রস্তুতিও প্রায় নিয়েছিল তারা। কিন্তু তাদের সব আয়োজন মাটি করে দেয় ইতালি। নাটুকে ফাইনালে টাইব্রেকে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় থ্রি লায়নদের। মেয়েদের শিরোপা জয়ে দেশটির দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব হলো।