ইউরো ২০২০: ‘নীরব ঘাতক’ অস্ট্রিয়া

এবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে আলোচনায় নেই অস্ট্রিয়া। যা দলটার প্রতি অন্যায্য। কেননা গত আসরের তুলনায় অস্ট্রিয়া আরো পরিণত এবং শক্তিশালী। বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে তারা। কিন্তু দলটার সমস্যা হচ্ছে, ঘরের মাঠে কোনো ম্যাচ জিততে না পারাটা। অথচ এবারের আসরে স্বাগতিক দেশগুলোর মধ্যে একটি তারা।

গ্রুপের প্রথম ও শেষ ম্যাচটি অস্ট্রিয়া খেলবে নিজেদের মাঠ বুখারেস্টে। গেল মার্চে প্রতিপক্ষের মাঠেই চমক দেখিয়েছে তারা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটিতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ডেনমার্ককে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে অস্ট্রিয়ানরা। যা এবারের ইউরোতে তাদের নীরব ঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করছে। খুব একটা প্রত্যাশা নেই দলটিকে ঘিরে। তাই চলমান ইউরোতে চাপমুক্ত ফুটবল খেলবে অস্ট্রিয়া।

প্রধান কোচ - ফ্র্যাঙ্কো ফোডা: অস্ট্রিয়ার অন্যতম শক্তি তাদের জার্মান কোচ ফোডা। খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই যথেষ্ঠ নাম কুড়িয়েছেন তিনি। তবে অস্ট্রিয়ায় কোচিংয়ের শুরুতে বিতর্কের জস্ম দিয়েছিলেন ফোডা। সাবেক তারকা আন্দ্রেস হারজগকে দলে নিয়ে আসেন তিনি। সেই বিতর্ক পেছনে ফেলে অস্ট্রিয়াকে জার্মান কোচ এনে দিয়েছেন ইউরোর মূলপর্বের টিকিট। ফোডার সবচেয়ে বড় গুণ- ম্যাচের যে কোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেন তিনি।

প্রধান অস্ত্র - ডেভিড আলাবা: অস্ট্রিয়া ফুটবল দলের সবচেয়ে বড় তারকা আলাবা। জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে ১৩ বছর কাটিয়ে সম্প্রতি রিয়াল মাদ্রিদে নাম লিখিয়েছেন তিনি। এবারের ইউরোতে অস্ট্রিয়ার তুরুপের তাস তিনিই। আলাবার বিশেষ দক্ষতা- মাঠের যে কোনো পজিশনে খেলতে পারেন। ক্লাব ফুটবলে ডিফেন্ডার হিসেবে খেললেও সাম্প্রতিককালে অস্টিয়ার হয়ে লেফট উইঙ্গার হিসেবে খেলছেন তিনি। মহুমুখী প্রতিভার অধিকারি তথা সাব্যসাচী এই ফুটবলারের দিকে তাকিয়ে আছেন অস্ট্রিয়ানরা। যদিও গত আসরটা ভালো কাটেনি আলাবার। এই আসরটা তার জন্য জ্বলে ওঠার মঞ্চ।

তরুণ তুর্কি - ক্রিস্টোফ বামগার্টনার: অনেকের মধ্যে একটা সংশয় ছিল। মনে করা হতো অস্ট্রিয়া অধিনায়ক জুলিয়ান বামগার্টলিঙ্গারের ভাই ক্রিস্টোফ বামগার্টনার। আসলে তা নয়। তবে নাম নয়, নিজের পারফরম্যান্স দিয়েই আলোচনায় এসেছেন ২১ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। গেল মৌসুমে জার্মান ক্লাব হফেনহেইমের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন তিনি।

গত বছর অস্ট্রিয়া দলে অভিষেকেই নজর কেড়েছেন সবার। দীর্ঘ সময় বল দখলে রেখে খেলতে পারেন বামগার্টনার। দ্রুত পজিশন পাল্টাতে পারদর্শী তিনি। তার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- রকেট গতিতে শট নিতে পারাটা। গেল মৌসুমে জার্মান বুন্দেসলিগার অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ছিলেন এই অস্ট্রিয়ান।

গ্রুপপর্ব: ‘সি’ গ্রুপের আন্ডারডগ অস্ট্রিয়া। তাদের খেলতে হবে শক্তিশালী নেদারল্যান্ডস ও ইউক্রেনের সঙ্গে। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে হলে এই দুটো ম্যাচের একটিতে দুর্দান্ত খেলতে হবে অস্ট্রিয়াকে। শুধু তাই নয়, খর্বশক্তির উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে পেতে হবে প্রত্যাশিত জয়। অন্যথায় গ্রুপপর্বেই থেমে যেতে পারে অস্ট্রিয়ানদের পথচলা। তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হচ্ছে- ঘরের মাঠে গ্রুপপর্বের দুটি ম্যাচ।

সম্ভাব্য একাদশ: গোলরক্ষক: স্ক্যালাগার; ডিফেন্ডার: ল্যানিয়ার, দ্রাগোভিচ, হিন্টারেগোর, উলমার; মিডফিল্ডার: বামগার্টলিঙ্গার, হ্যাভিয়ের স্ক্যালাগার, সাবিতজার, বামগার্টনার, আলাবা; ফরওয়ার্ড: কালাডজিক।

সেরা সাফল্য: গ্রুপপর্ব (২০০৮ ও ২০১৬)

ফিফা র্যাঙ্কিং: ২৩

অস্ট্রিয়া ম্যাচসূচি:

১৩ জুন: অস্ট্রিয়া-উত্তর মেসিডোনিয়া (এরেনা ন্যাশনালা; বুখারেস্ট)
১৭ জুন: নেদারল্যান্ডস-অস্ট্রিয়া (ইয়োহান ক্রুইফ স্টেডিয়াম; অ্যামস্টারডাম)
২১ জুন: অস্ট্রিয়া-ইউক্রেন (এরেনা ন্যাশনালা; বুখারেস্ট)