এমবাপ্পের ট্যালেন্ট তো আছেই, সেইসঙ্গে জয়ের মানসিকতাও

উয়েফা নেশন্স লিগে বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্স জিতেছে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে। স্কোরলাইন ৩-২। তবে এভাবে আসলে এ ম্যাচের বর্ণনা দেয়াটা এক ধরনের অপরাধ! কারণ ম্যাচের প্রথমার্ধে বেলজিয়াম দিয়ে রেখেছিল দুই গোল। ফ্রান্সের ভাণ্ডারে তখন কেবল শূন্যতাই সম্বল। প্রথমার্ধে লুকাকো-কারাসকোদের সামনে চেনাই যায়নি আতোয়া গ্রিজম্যান, করিম বেনজেমা ও এমবাপ্পেদেরকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে এসে দুই গোল শোধ তো করেছেই, উপরন্তু জয়সূচক আরেক গোল করে ফাইনালে চলে যায় দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা।

গোল করছেন এমবাপ্পে

প্রথমার্ধে বিবর্ণ থাকা ফ্রান্স দ্বিতীয়ার্ধে বেশ চাপিয়ে খেলতে থাকে। এর মধ্যে ৫৮ মিনিটে এমবাপ্পের দেয়া পাস কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন গোলমুখ থেকে মাত্র তিন গজ দূরে থাকা গ্রিজম্যান। ৬২ মিনিটে এমবাপ্পের বল খুঁজে নেয় ডি-বক্সে থাকা বেনজেমাকে। শরীর ঘুরিয়ে নিচু শটে বল জড়িয়ে দেন বেলজিয়ামের জালে। এর সাত মিনিট পরেই পেনাল্টি থেকে দলের গোললাইন আরো সমৃদ্ধ করেন এমবাপ্পে। স্কোরলাইন হয় সমান সমান। ৯০ মিনিটের সময় থিও হার্নান্দেজ করেন জয়সূচক গোলটি।

তুরিনের আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রাতে লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফিফা র‌্যাংকিংয়ের এক নম্বর দলকে এভাবেই হতভম্ব করে দেয় হুগো লোরিসের সতীর্থরা। ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে স্পেনের।

গোল করার পর অভিনন্দন জানাচ্ছেন হুগো লোরিস

এদিকে ম্যাচে এভাবে ফেরায় দলের সতীর্থদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন অধিনায়ক হুগো লোরিস। বিশেষ করে এমবাপ্পে যেভাবে প্রথম গোলে সহায়তা করেন এবং দ্বিতীয় গোল করে দলকে চাপমুক্ত করেন তার জন্য দরাজ গলায় প্রশংসা করেছেন তিনি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নামা এমবাপ্পের একের পর এক প্রচেষ্টা দেখে মুগ্ধ হন তিনি। লোরিস সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাচের সেই মুহূর্তে দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়ার বিষয়টি ছিল অসাধারণ।

তিনি বলেন, এমবাপ্পের অনেক প্রতিভা আছে। একই সঙ্গে তার পেছনে আছে তার বিজয়ী মানসিকতাও। ড্রেসিংরুমে আমরা সবাই তার জন্য বেশ খুশি।

২২ বছর বয়সী এমবাপ্পের জন্য সাম্প্রতিক সময়টি একটু কঠিনই যাচ্ছিল। ইউরো ২০২০-এ পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৪ গোলে হেরে গিয়েছিল ফ্রান্স। এমবাপ্পে পেনাল্টি মিস করাতে শেষ ষোলোতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ইউরো অভিযান। এরপর পিএসজি থেকে রিয়াল মাদ্রিদ যাওয়া-না যাওয়া নিয়েও বেশ হতাশ ছিলেন তিনি।

বিষণ্ন এমবাপ্পে এল-ইকুইপকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেই ফেলেছিলেন, ওই কিকটি মিস করার পর দল ও সতীর্থদের কাছ থেকে আরো বেশি সমর্থন আশা করেছিলেন। তবে সবসময় তার সাথে থাকার দাবি করে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম বলেছিলেন, আমি সবসময়ই জানি, কিলিয়ান এমবাপ্পের সাথে ফ্রান্সের দল আরো শক্তিশালী হবে। আমি কখনোই তার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ করিনি।