চীনে ‘রহস্যজনক’ ভাইরাসে দু’জনের মৃত্যু

চীনে ছড়িয়ে পড়া ‘রহস্যজনক’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন শত শত মানুষ। দেশটির বিশেষজ্ঞরা গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

এর আগে চীনা কর্তৃপক্ষ হুবেই প্রদেশের উহানে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে ৪১ জনের আক্রান্তের কথা জানয়েছিল। তবে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৭শ। ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়ে এ ব্যাপারে প্রস্তুত থাকতে বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

জানা যায়, নতুন 'রহস্যজনক' এই ভাইরাসে আক্রান্তদের বেশিরভাগই ইউহান শহরের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজারে কাজ করতেন। তাই ওই বাজারসহ আশপাশ পরিষ্কার করছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ। এদিকে সংক্রামণের কারণে ইউহান শহর থেকে আসা সকল পর্যটকদের স্ক্রিনিং করছে হংকং ও সিঙ্গাপুর।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নতুন ভাইরাসটি করোনাভাইরাস (সিওভি) পরিবারের বলে নিশ্চিত করেছে। গত ১৩ জানুয়ারি প্রকাশিত এক নির্দেশনা ও বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, সম্প্রতি থাইল্যান্ডের এক ব্যক্তির দেহে অজানা এ করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার পর তারা (ডব্লিউএইচও) থাইল্যান্ড ও চীনের সঙ্গে কাজ শুরু করছে। চীনের উহান থেকে ফেরার পর থাই কর্মকর্তারা তাকে ৮ জানুয়ারি শনাক্ত করেছিলেন। ভাইরাসটি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে যেতে পারে বলে সংস্থাটি সচেতন থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাওয়া এবং রোগ সংকমণ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

উহানে ছড়িয়ে পড়া নিউমোনিয়া-সদৃশ এ ভাইরাসটি নতুন এক ধরনের করোনাভাইরাস। প্রচলিত নিউমোনিয়া রোগের জন্য স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি নামের একটি ব্যাকটেরিয়াকে দায়ী করা হলেও সম্প্রতি দেখা দিয়েছে নতুন এই ভাইরাস, যেটি পরিচিতি পেয়েছে ‘উহান ভাইরাস’ বা ‘উহান নিউমোনিয়া’ নামে।

এদিকে, চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে, নতুন এই ভাইরাসের সঙ্গে প্রাণঘাতী রোগ সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমের (সার্স) মিল রয়েছে। যা অনেকটা ফ্লুয়ের মতো। ২০০২ সালে চীনে উৎপত্তি হওয়ার এক বছরের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে ৭০০ জন মানুষ মারা গিয়েছিল।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড হোমস বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স’ কে বলেন, প্রাথমিকভাবে সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাং ইওং-ঝেনের নেতৃত্বে একদল গবেষক ভাইরাসের পাঁচ ধরনের ডিএনএ সিকুয়েন্স পেয়েছে। যা ইতোমধ্যে ডেটাবেজে শেয়ার করা হয়েছে। যদি এটি মহামারি আকারে রূপ নেয়, তাহলে এ সিকুয়েন্স নতুন গবেষণার খোরাক যোগাবে।