পুতিনের মাস্ক না পরার নেপথ্যে

রাশিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নেহায়েত কম না। সংক্রমণের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশটি। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিশ্বের অনেক দেশে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, টিকা বা প্রতিষেধক না আসা পর্যন্ত মাস্ক পরা তথা স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া বিকল্প নেই। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক্ষেত্রে আলাদা। তাকে কখনো মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

মাস্ক ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে পুতিন

সম্প্রতি আবারো তাকে মাস্ক না পরে জনসমক্ষে হাজির হতে দেখা গেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ফুটেজে দেখা যায়, সংবিধান সংশোধনের নিমিত্তে আয়োজিত গণভোটে ভোট দিচ্ছেন তিনি। এ সময় অন্যরা মাস্ক পরলেও তার মুখে মাস্ক ছিল না। হাতে ছিল না গ্লাভসও।

প্রসঙ্গত, সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট পড়লে পুতিন আরো ১৬ বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।

বিবিসি বলছে, রাজধানী মস্কোর ওই ভোটকেন্দ্রের মতো জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট এ রকম একটা জায়গায়ও মাস্ক পরেননি। এর মাধ্যমে স্পষ্টতই তিনি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ ভঙ্গ করেছেন।

গত ৩১ মার্চ করোনারোগীদের হাসপাতাল পরিদর্শনে পুতিন (বামে), পরে হাসপাতাল প্রধানের (ডানে) করোনা শনাক্ত হয়

দেশটিতে করোনার মহামারি শুরুর পর থেকে কখনোই প্রেসিডেন্ট পুতিনকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। যদিও মার্চে মস্কোয় করোনারোগীদের একটি হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় তিনি নিজের সুরক্ষার জন্য হাজমাত স্যুট পরেছিলেন। তবে তখনও তাকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

এমনকি পরিদর্শনে গিয়ে পুতিন যখন ওই হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তখনও তার এবং অন্যদের মুখে মাস্ক ছিল না। এর সপ্তাহ খানেক পর ওই হাসপাতালের প্রধানের কোভিড-১৯ শনাক্ত হলে আইসোলেশনে চলে যান প্রেসিডেন্ট পুতিন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো- যে করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বকে থমকে দিয়েছে, সেই ভয়ংকর ভাইরাস থেকে বাঁচতেও মাস্ক পরতে পুতিনের এতো অনীহা কেন?

এ ব্যাপারে বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যাটা একটু অন্য রকম। তারা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের খালি গায়ে ঘোড়ায় চড়ার ছবি দেখে মানুষের মনে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে তিনি তার পৌরুষ প্রকাশ করতে চান। হয়তো এ কারণেই ভ্লাদিমির পুতিন নিজের মুখে মাস্ক পরাকে দুর্বলতা হিসেবে দেখেন এবং মাস্ক পরা থেকে বিরত থাকছেন। তবে প্রকৃত রহস্য তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

মার্কিন জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, রাশিয়ায় এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি লোক ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছে। মারা গেছে সাড়ে ৯ হাজারের বেশি। তবে সুস্থ হয়েছে ৪ লাখ ২৩ হাজারের মতো।