চীনে এবার প্লেগ, সতর্কতা জারি

করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এমনকি ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। ইতোমধ্যে রাজধানী বেইজিংয়ের বেশ কিছু এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। এর মধ্যেই এবার দেশটিতে প্লেগ রোগী শনাক্ত হয়েছে। জারি করা হয়েছে সতর্কতা।

করোনার মধ্যেই চীনে ছড়িয়েছে প্লেগ

জানা গেছে, চীনের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে পশুপালক এক ব্যক্তির শরীরে বিউবোনিক প্লেগের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর পর সেখানে তৃতীয় স্তরের সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিবিসি বলছে, গত শনিবার বায়ানুর শহরের উরাদ মিডল ব্যানারের একটি হাসপাতালে বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। তিনি এখন কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তার অবস্থা স্থিতিশীল। তবে ওই ব্যক্তি ঠিক কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে ছড়ায় এই প্লেগটি। এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে বাজারে বিদ্যমান অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধে এর চিকিৎসা করা যেতে পারে।

করোনার মধ্যেই চীনে ছড়িয়েছে প্লেগ

এদিকে, ওই ব্যক্তি শনাক্তের পর ইনার মঙ্গোলিয়া কর্তৃপক্ষ তৃতীয় স্তরের সতর্কতা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, প্লেগের জীবাণু বহনে সক্ষম প্রাণী শিকার ও খাওয়া এখন থেকে নিষিদ্ধ। পাশাপাশি বিউবোনিক প্লেগের লক্ষণ কারো মধ্যে দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ সালে মাদাগাস্কারে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। ওই সময় ৩০০ এর মতো রোগী পাওয়া যায়।

অন্যদিকে, ২০১৯ সালের মে মাসে মঙ্গোলিয়ায় প্লেগটির দেখা মেলে। এতে আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। তারা মারমোটের বা এক ধরনের বুনো ইঁদুরের কাঁচা মাংস খাওয়ার কারণে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে সে সময় জানানো হয়।

এ ছাড়া চতুর্দশ শতাব্দীতে ব্ল্যাক ডেথ মহামারি হিসেবে পরিচিত এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল। সে সময় আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

উনিশ শতকে চীন ও ভারতে প্লেগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে প্রায় এক কোটি ২ লাখ লোকের মৃত্যু হয়। ১৬৬৫ সালে ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে গ্রেট প্লেগের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ ছিল। তখন শহরটির প্রায় পাঁচ ভাগের একভাগ লোক মারা যায়।