ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ‘প্রতারণা করেছে’ আমিরাত!

ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে শান্তি চুক্তি ঘোষণায় বিস্মিত ও হতাশ হয়েছেন ফিলিস্তিনের জনগণ। তারা বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত শুধুমাত্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যা খুবই লজ্জাজনক।

আবু ধাবি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (মাঝে) ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

এ বিষয়ে শুক্রবার ফিলিস্তিনের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আহমেদ মাজদালানি বলেন, চুক্তির বিষয়ে আগে থেকে খুব একটা জানতেন না। দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছানো এবং চুক্তি ঘোষণার সময় বিবেচনায় তারা বিস্মিত। ঘোষণাটা এমন সময়ে এলো যখন ফিলিস্তিনিরা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

সাবেক ফিলিস্তিনি মন্ত্রী মুনিব আল মাসরি বলেন, ২০০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর আবুধাবি শাসন করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, মরহুম শেখ জায়েদ খুবই পছন্দের মানুষ ছিলেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিতে পেরে গর্ববোধ করতেন। তাই নিজের জীবদ্দশায় এমনটা দেখতে হবে, কখনো ভাবতেই পারিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাত শুধুমাত্র সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে প্রতারণা করবে, এটা লজ্জাজনক।

এদিকে চুক্তির ঘোষণাটা হঠাৎই এসেছে এবং তাতে খুব একটা অবাক হননি বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।

প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনেশিয়েটিভের নেতা এবং পার্লামেন্ট সদস্য মুস্তাফা আল বারঘৌতি বলেন, তিনি মোটেও অবাক হননি। কারণ আমিরাতের সামরিক বাহিনী কখনোই সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীকে মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিল না। সম্প্রতিক সময়ে তারা কিছু আজব পদক্ষেপও নিয়েছে। বিশেষ করে আমিরাতে ইসরায়েলের সরাসরি বিমান পরিচালনা। তবে এটা পরিষ্কার যে আগের কর্মকাগুলো এ ঘোষণা হজমের প্রাথমিক ধাপ।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েল-আমিরাত 'শান্তি চুক্তির' প্রতিবাদে বিক্ষোভ

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর মধ্য দিয়ে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করতে যাচ্ছে ইসরায়েল।

পরে এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবু ধাবি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ঐতিহাসিক এই অগ্রগতির মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এই চুক্তির ফলে ইসরায়েল তাদের দখলকৃত পশ্চিম তীরের বৃহৎ অংশকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা স্থগিত করবে বলে জানিয়েছে।

ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিরা আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে এ নিয়ে বৈঠক করবেন। সেখানে বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি বিমান যোগাযোগ, সুরক্ষা, টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, শক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, পরিবেশ, পারস্পরিক দূতাবাস স্থাপন সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করবেন তারা।