টার্গেট ২০৫৩, চীনে বাড়ছে অবসরের বয়স

দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের জন্য ২০৫৩ সালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কমিউনিস্ট শাসিত চীন। এর অংশ হিসেবে অবসর নেয়ার বয়স বাড়াচ্ছে দেশটি। সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলার তেমন একটা সুযোগ না থাকায় অনেকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সামাজিকমাধ্যমে।

দুই প্রজন্মের দুই চীনা নাগরিক

চীনা রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, বর্তমানে সরকারি চাকরির বয়সসীমা পুরুষের ৬০ ও নারীর ৫৫ বছর নির্ধারিত রয়েছে। গত চার দশক ধরে অবসরের বয়স অপরিবর্তিত ছিল। এখন অবসরের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে।

একটি থিংকট্যাংকের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বর্তমানে চীনে ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষ প্রায় ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০৫৩ সাল নাগাদ তা ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০১৮ সালের এক হিসাবে দেখা যায়, চীনে মোট নাগরিক প্রায় ১৪০ কোটি। এর মধ্যে ২৫ কোটি মানুষ ৬০ বছরের বেশি বয়সী। বিষয়টি এখন চীনা কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রীয় আরেক গণমাধ্যম সিকিউরিটিজ টাইমস জানায়, অবসরের বয়স অবশ্যম্ভাবীভাবে বাড়ানো হচ্ছে। অনেক দেশের চেয়ে চীনে অবসরের বয়স এখনো অনেক কম। জাপান গত বছর চাকরির বয়সসীমা ৭০ করেছে, ৭৫ বছর করাও চিন্তা করছে দেশটি।

দুই প্রজন্মের দুই চীনা নাগরিক

অবসরের বয়স বাড়ানোর পরামর্শ ২০১৩ সালে গৃহীত হলে জনগণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ কারণে এতদিন তা বাস্তবায়ন করেনি চীনা সরকার।

নতুন করে ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তারপরেও সাধারণ মানুষ চীনা সামাজিকমাধ্যম ওয়েবুতে অসন্তোষ প্রকাশ করছে।

গতকাল শুক্রবার একজন লিখেছেন, অবসরের সময় বাড়লে পেনশনের টাকা পাওয়া বিলম্বিত হবে। আরেকজনের মত, দেরিতে অবসর দেয়া অপ্রয়োজনীয়, যুক্তি নেই।

বয়স্ক মানুষের সংখ্যা অত্যধিক বাড়ায় পেনশন নিয়েও চাপে রয়েছে চীনা সরকার। ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটির পেনশন ফান্ড অসচ্ছল হয়ে পড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে একটি গবেষণা সংস্থা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে, বিপরীতে কর্মক্ষমের সংখ্যা কমছে। চার দশক ধরে এক সন্তান নীতি বলায় কুফল ভোগ করছে দেশটি। একে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক টাইমবোমার সাথে তুলনা করা চলে।