গোলায় কাঁপল মিয়ানমার, বিদ্রোহীদের দখলে সেনা ক্যাম্প

মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে তুমুল লড়াই হয়েছে সশস্ত্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী কারেনদের। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) ভোর থেকে ভারী গোলাবারুদ বিনিময়ের শব্দে পূর্বাঞ্চলের সীমান্তে সেনা ঘাঁটিগুলো কেঁপে উঠে। দীর্ঘদিন থাইল্যান্ড সীমান্তের এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ করে আসছে বিদ্রোহী কারেনরা।

গোলায় কাঁপল মিয়ানমার, বিদ্রোহীদের দখলে সেনা ক্যাম্প

দি কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) বলেছে, ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর হামলা চালিয়ে তাদের বেশকিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে হারানো অবস্থানগুলো পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

মিয়ানমারের সংঘাত থামাতে জান্তাপ্রধান ও আসিয়ান নেতাদের সমঝোতা বৈঠকের এক দিন পরই এ হামলার ঘটনা ঘটল বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সংঘর্ষ শুরু হলে গ্রামবাসী সালউইন নদী পার হয়ে থাইল্যান্ডে অবস্থান নেন। তারা বলছেন, সূর্য উঠার পরপরই তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে পাহাড়ের শিখায় বনভূমিতে আগুন ও ধোঁয়া দেখা গেছে।

কেএনইউর বৈদেশিক প্রধান প্যাদো স থও নি বলেন, ‘ভোর ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে কারেন যোদ্ধারা বনভূমির দখল নিয়েছে। সেনা ক্যাম্প দখল করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের যোদ্ধারা এখন সেখানে কেউ হতাহত হয়েছে কি না, তা সন্ধান করছে।’ কারেন অঞ্চলের আরও কয়েকটি স্থানে সেনাবাহিনীর সাথে তাদের লড়াই শুরু হয়েছে উল্লেখ করলেও বিস্তারিত জানাননি তিনি।

গোলায় কাঁপল মিয়ানমার, বিদ্রোহীদের দখলে সেনা ক্যাম্প

দি কারেন ইনফরমেশন সেন্টার ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হামলার মুখে সেনাবাহিনী তাদের ক্যাম্প গুটিয়ে ফেলে। গ্রামবাসীও সাত সেনা সদস্যকে দৌড়ে পালাতে দেখেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

থাই সীমান্তের যে সব গ্রামবাসী সেনাদের সাথে যোগাযোগ করতেন, তারা জানান, কেএনইউ যোদ্ধাদের পেটে গড়ে তোলা থাই সীমান্তের সেনা ক্যাম্পগুলোতে সম্প্রতি তীব্র খাবার সংকট দেখা দেয়। থাইল্যান্ডের মায়ে হং সন প্রদেশের এক কর্মকর্তা জানান, সংঘর্ষে আহত একজন থাইল্যান্ডে এসেছেন। তবে এর বেশি কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

কারেন গ্রুপ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার বাহিনীর বিমান হামলায় তাদের ২৪ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোমধ্যে কারেনসহ দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জান্তাবিরোধী ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে’ সমর্থন দিয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার দখল নেয় সেনাবাহিনী। এরপর থেকে দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে ৭৫০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। ৩ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।