ইসরায়েল বয়কটে প্রশংসায় ভাসছেন আইরিশ লেখিকা

অনেক বাঘা বাঘা লেখক যে কাজ করার সাহস পাননি সেই কাজটি অবলীলায় করেছেন তিনি। ইসরায়েল দখলদারিত্ব সমর্থনকারী এক প্রতিষ্ঠানকে মানা করে দিয়েছেন নিজের তৃতীয় উপন্যাস হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করতে। ইসরায়েলকে বর্ণবাদী রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আধিপত্যের কথা উল্লেখ করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী ও আধিপত্যবাদবিরোধীদের প্রশংসায় ভাসছেন আইরিশ লেখিকা স্যালি রুনি।

আইরিশ লেখিকা স্যালি রুনি ও তার উপন্যাস

গত ৭ সেপ্টেম্বর বের হয়েছে রুনির নতুন উপন্যাস ‘বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড, হোয়্যার আর ইউ’। এরইমধ্যে কয়েকটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। উপন্যাসটির হিব্রু অনুবাদের স্বত্ব কিনতে চেয়েছিল ইসরায়েলভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মোদান। এতে রাজি হননি আইরিশ লেখিকা। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি আচরণের প্রতিবাদে সোজা না বলে দেন তিনি।

চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, স্যালি রুনি তার নতুন বইটি হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করতে দিতে চান না। তখন নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে এক বিবৃতিতে তিনি জানান, বইয়ের হিব্রু অনুবাদের বিপক্ষে নই। তবে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের সমর্থক কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তা করতে চাই না। আমার রাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে মিল রয়েছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান কাজটা করতে চাইলে আমি সম্মানিত বোধ করবো।

স্যালি রুনি

স্যালি রুনিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসার জোয়ারে ভাসাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থীরা। অন্যদিকে, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরায়েল সমর্থকরা। স্যালি রুনি বলেন, জানি, সবাই আমার সিদ্ধান্তের সাথে একমত হবে না। তবে আমি মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা প্রকাশ্যে বর্ণবৈষম্য থেকে নিজেকে দূরে রাখে না, এমন কোনো ইসরায়েলি কোম্পানির সাথে চুক্তি করা আমার জন্য ঠিক হবে না।

৩০ বছর বয়সী স্যালি রুনিই প্রথম লেখক নন, যিনি ইসরায়েলি ভাষায় বই প্রকাশ করতে এমন বাধা দিয়েছেন। এর আগে ২০১২ সালে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করে নিজের কাজ হিব্রুতে অনুবাদ করতে বাধা দিয়েছিলেন অ্যালিস ওয়াকার নামের আরেক ঔপন্যাসিক।

স্যালি রুনি তার উপন্যাসের জন্য একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে দ্য সানডে টাইমস ইয়ং রাইটার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৮ সালের কোস্টা বুক অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য।

সূত্র: বিবিসি