বিতর্কিত মানবাধিকার কাউন্সিলে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে আবারো যোগ দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিতর্কিত এই কাউন্সিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়। এবার বাইডেন প্রশাসন ফের সেই কাউন্সিলে যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর দিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তর, ফাইল ছবি

খবরে বলা হয়েছে, ১৮টি নতুন সদস্যকে যুক্ত করতে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪৭ সদস্যের কাউন্সিলে ভোটাভোটি হবে। যেসব দেশের প্রার্থীর একটি আসন নিশ্চিত করতে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের প্রয়োজন, তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া লিথুয়ানিয়া, কাতার, আর্জেন্টিনা, ভারত ও সোমালিয়ার মতো দেশগুলোও নতুন করে সদস্যপদ পেতে চায়। তবে নিজস্ব মানবাধিকার ট্র্যাক রেকর্ডের কারণে এদের মধ্যে কিছু প্রার্থী অন্যদের চেয়ে বেশি বিতর্কিত।

ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জাতিসংঘের পরিচালক লুই চার্বোনেউ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, অযোগ্য কোনো প্রার্থীকে যেন ভোট না দেওয়া হয়। অবশ্য আশা করা হচ্ছে যে, কাউন্সিলে যেসব দেশ যোগদান করবে, তারা তাদের দেশ ও বিদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা ও সুরক্ষায় সর্বোচ্চ মান বজায় রাখবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যক্রম সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কূটনীতিকরা বলছেন, সংস্থাটি সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং কড়া প্রতিবেদন তৈরি করেছে। পাশাপাশি ইরান, উত্তর কোরিয়া এবং মিয়ানমারসহ কিছু দেশের অভ্যন্তরীণ নির্যাতনের বিষয়েও আলোকপাত করেছে মানবাধিকার কাউন্সিল।

কিন্তু এই একই সংস্থা আবার ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে নিশ্চুপ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। এ ছাড়া চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তানের মতো কয়েকটি দেশের, যেগুলো নিজেরাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে অভিযুক্ত, ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে এই কাউন্সিলের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এ নিয়ে প্রায়ই সমালোচনাও হয়।

উল্লেখ্য, অকার্যকর জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন বা ইউএনএইচআরসি-কে ভেঙে দিয়ে ২০০৬ সালে করা হয় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল। সে সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন সংস্থাটির সদস্যপদ নেওয়ার বিরোধী ছিল। ফলে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এতে যোগ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।

পরবর্তীতে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এতে যোগ দেয়। ওবামা প্রশাসনের তরফ থেকে ওই সময় বলা হয়েছিল যে, তারা এর ভেতর থেকে কাজ করে কাউন্সিলের মানোন্নয়ন করতে চায়। তবে ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার প্রশাসন ২০১৮ সালে দেশটিকে মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।