গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণে রেকর্ড, জাতিসংঘের সতর্ক বার্তা

২০২০ সালে গ্রিনহাউস গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে যানবাহন ও কলকারখানা বন্ধ থাকার পরও এমন দুঃখজনক রেকর্ড সৃষ্টি হয়। জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

মানবসৃষ্ট কারণেই বাড়ছে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন

ডব্লিউএমও-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ছিল ৪১৩ দশমিক ২ পার্টস। বায়ুমণ্ডলে গত এক দশকে এত বেশি পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। আল জাজিরা। 

ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক পেটেরি তালাস এক বিবৃতিতে জানান, ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে শর্ত দেওয়া হয়েছিল, প্রাক শিল্পযুগের তুলনায় বিশ্বের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারবে। স্বাক্ষরকারী দেশসমূহ এই শর্ত মেনেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু গত বছর যে হারে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ ঘটেছে, তা অব্যাহত থাকলে বিশ্ববাসীর সামনে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে।

নাইট্রোজেন সারের প্রয়োগেও গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে

আগামী নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন। সম্মেলনগুলোতে প্রতিবারই বহু প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা মানা হয় না। বিশেষ করে প্রভাবশালী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি খুব কমই পালন করে।

কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিচ্ছে অনেক দেশ। কেউ ২০৫০ আবার কেউ ২০৬০ সালের মধ্যে এই ঘোষণা কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০০৯ সালে বিশ্বের ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করতে অনুন্নত দেশগুলোকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হবে; কিন্তু সে কথা রাখেনি তারা।

রয়টার্সের অর্থনীতিবিদদের প্যানেল সম্প্রতি হিসেব কষে দেখিয়েছে, প্রতি বছর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খাতে উন্নত দেশগুলো যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে, তার মাত্র ২-৩ শতাংশ দিয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে বিশ্বকে আরো বেশি সবুজ করে তোলা সম্ভব। এভাবে কার্বণ নিঃসরণের মাত্রাও অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।