আপনি পড়ছেন

তালেবানের কাবুল দখল নিয়ে তাদের একটি কৌশল ফাঁস হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ঘানি সরকারের দপ্তর দপ্তরে তালেবানের গোপন সদস্যরা ছদ্মবেশ ধারণ করে কাজ করত। তারা সবাই তালেবান গোয়েন্দা সংস্থার একটি গোপন নেটওয়ার্কে যুক্ত ছিল। মূলত বিনা রক্তপাতে কাবুল দখলে তারাই সহায়তা করেছিল।

afgan talibanগোপনে ঘানি প্রশাসনে ছড়িয়ে পড়েছিল ছদ্মবেশী তালেবানরা

খবরে বলা হচ্ছে, ওই কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা মূলত তালেবান গোয়েন্দাদের একটি স্বতন্ত্র গ্রুপের সদস্য। যারা যুদ্ধের পাশাপাশি ভেতর থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। খামা প্রেস।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গতকাল রোববার জানিয়েছে, তালেবানের এজেন্টরা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবসায়িক সংস্থা এবং সাহায্য সংস্থাগুলোতে সরব ছিল। হাক্কানি নেটওয়ার্কের অনুগত একজন শীর্ষ তালেবান নেতা মওলভি মোহাম্মদ সেলিম সাদ জানিয়েছেন, তাদের প্রতিটি সংস্থা এবং বিভাগে এজেন্ট রয়েছে। যারা কাবুলে প্রবেশের আগেই কৌশলগত অবস্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।

মোহাম্মদ সেলিম সাদ কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রধান। পত্রিকাটির খবরে বলা হচ্ছে, ওই গোয়েন্দা সদস্যরা ১৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুকগুলো সরিয়ে নেওয়া এবং তাদেরকে নিরস্ত্র করার কাজ করেছিল। রাজধানী কাবুলের কৌশলগত অবস্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে।

মোহাম্মদ রহিম ওমারি তালেবানের বদরি বাহিনীর একজন সদস্য। তিনি মধ্যস্তরের কমান্ডার। কাবুলে তার পরিবারের পেট্রল-বাণিজ্যের ব্যবসা রয়েছে। তিনি বলছেন, তাকে এবং অন্য ১২ জনকে শহরের পূর্বে একটি আফগান গোয়েন্দা পরিষেবা কম্পাউন্ডে পাঠানো হয়। যেখানে তারা কর্তব্যরত অফিসারদের নিরস্ত্র করে এবং কম্পিউটার ও ফাইলগুলো ধ্বংস করা থেকে তাদেরকে বাধা দেয়।

গোয়েন্দাদের অন্যান্য সেলগুলো বিভিন্ন সরকারি ও সামরিক স্থাপনা দখল করার জন্য ব্যবহার করা হয়। টিমের সদস্যদের কাবুল বিমানবন্দরেও পাঠানো হয়, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের লোকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছির। সকালে গ্রামাঞ্চল থেকে উন্নত সশস্ত্র তালেবান সেনারা না আসা পর্যন্ত তারা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। এমনকি সম্ভাব্য লুটেরাদের হাত থেকে আফগান প্রত্নতত্ত্ব ইনস্টিটিউট এবং এর ধনসম্পদ সুরক্ষিত করার জন্য লোক নিযুক্ত ছিল।

একইভাবে আরেকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কাজে। কাবুলের পশ্চিমে ওয়ার্দাক প্রদেশের ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালে ইউনিভার্সিটিতে আরবি ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার সময় তিনি গোপনে তালেবান হিসেবে দায়িত্ব পান। বছরের পর বছর ধরে তিনি প্রায় ৫০০ জনকে দলে ভেড়াতে সক্ষম হন। কিন্তু তাদের পোশাক ছিল পশ্চিমা ধাচের। তারা দাড়ি কামাতেন, জিন্স টাই পরতেন।

তিনি বলছেন, আমাদের অনেক বন্ধু যাদের দাড়ি ছিল, তাদের তালেবান হিসেবে টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু আমি সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিলাম। অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। অথচ আমি তাদের নেতা ছিলাম। বহু শিক্ষার্থী আমাকে ১৫ আগস্টে তালেবান হিসেবে প্রথমবারের মতো জানতে পারেন, যেদিন সরাসরি বন্দুক নিয়ে হাজির হয়েছিলাম। মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মীরা আমাকে চিনতেন। তারা আমাকে দেখে অবাক হয়েছিল। কামরান এখন কাবুলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ইউনিটের প্রধান। এখন তিনি তার তালেবানি পোশাক গ্রহণ করেছেন।

খবরে আরও বলা হচ্ছে, ভারতে পড়ার জন্য বৃত্তির সুযোগ দেওয়া ছাত্রদের মধ্যেও তালেবান সদস্য রয়েছে। ঘানি সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমদ ওয়ালী হকমল তালেবান সদস্য ছিলেন। তিনি কান্দাহার বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। তালেবানের এই গুরুত্বপূর্ণ গোপন নেটওয়ার্কই সংঘর্ষ ছাড়া কাবুল ও ঘানি প্রশাসনের পতন ডেকে এনেছিল।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.