করোনার মাশুল গুনছে কাশ্মিরের পেন্সিলগ্রাম

আগের অবস্থানে নেই কাশ্মিরের পুলওয়ামার সেই পেন্সিলগ্রাম। গ্রামটির মূল নাম উখু গ্রাম। করোনার ‘ষোলো আনা’ মাশুল গুনছে ঐতিহ্যবাহী ওই গ্রামটি। গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার মাসিক বেতার অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’-এ বলেছিলেন, কীভাবে আমদানির ওপর দেশের নির্ভরতা কমানো যায় তার একটি উদাহরণ কাশ্মিরের এই পুলওয়ামা জেলা।

পেন্সিলের জন্য কাটা কাঠ

এক সময় আমরা বিদেশ থেকে পেন্সিলের জন্য কাঠ আমদানি করতাম। কিন্তু এখন আমাদের পুলওয়ামা পেন্সিল তৈরির ক্ষেত্রে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলছে। গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠানটির ৭০তম পর্বে এ কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর দি গার্ডিয়ান।

ভারতে পেন্সিল খাতে মোট চাহিদার ৯০ শতাংশ কাঠ সরবরাহ করে গ্রামটি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ১৫০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হতো এই পেন্সিল। কিন্তু গত দেড় বছর করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ধুঁকছে এ শিল্প, এমনকি এ গ্রামের বাসিন্দারাও।

পেন্সিল গ্রামের শিশু পেন্সিল হাতে, পাশে পেন্সিল তৈরির জন্য কাটা হচ্ছে কাঠ

কারণ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক-কর্মচারী, কর্মকর্তা সবাই এ গ্রামেরই মানুষ। নাটকীয়ভাবে কমে গেছে শিল্পটির সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের চাহিদা। বেকার হয়ে পড়েছেন শতশত শ্রমিক-কর্মচারী। বিপর্যয় নেমে এসেছে তাদের উলে­খযোগ্য এ কর্মসংস্থানের ওপর।

কোভিডের আগে ১৭টি পেন্সিল কারখানায় আড়াই হাজারেরও বেশি লোক কাজ করতো, যা থেকে জীবিকা নির্বাহ করতো প্রায় আড়াই শ পরিবার। কিন্তু গত প্রায় দুই বছরে পেন্সিলের চাহিদা কমে আসায় কারখানার মালিকরা তাদের কর্মী সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমিয়েছে।

বরখাস্ত করা হয়েছিল বহু শ্রমিককে। নিয়মিত বেতন না পেয়ে হতাশ হয়ে অনেকে চলে গিয়েছিলেন চাকরি ছেড়ে। এখন এই বেকার শ্রমিকরা অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন, কবে পেন্সিলের চাহিদা বাড়বে এবং ডাক পাবেন তারা।

তবে নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটানো শ্রমিক পরিবার। আশার কথা হচ্ছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গ্রামটিকে উৎপাদনের জন্য একটি বিশেষ জোন হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে।