আবুধাবিতে হুথিদের হামলা, শঙ্কায় ইসরায়েল

অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে কয়েকদিন আগে ইয়েমেন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে জানিয়েছিল, আরব আমিরাতের সুউচ্চ ভবনগুলো তাদের হামলার আওতায় রয়েছে। বিষয়টিকে কেউ তেমন গুরুত্ব না দিলেও আবুধাবিতে ড্রোন হামলার পর সবাই নড়েচড়ে বসেছে। শঙ্কিত হয়ে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলও। তবে এর মধ্যে তারা ব্যবসাও খুঁজে বেড়াচ্ছে।

আরব আমিরাতে হুথিদের হামলা

এর আগে হুথিরা মাঝে মধ্যেই সৌদি আরবে ছোটখাটো হামলা চালাতো। কিন্তু গত ১৭ জানুয়ারি তারা হামলা চালিয়ে বসে ১ হাজার মাইল দূরে অবস্থিত হুথিদের আরেক বিরোধিতাকারী দেশ আরব আমিরাতে। তেলের ট্যাঙ্কার, বিমানবন্দরে হামলা চালায় তারা।

আরব আমিরাতের পুলিশ জানায়, আবুধাবির একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল স্থাপনায় হামলা চালানো হলে তেলের তিনটি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরিত হয়। এছাড়া আগুন লাগে আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত এলাকায়। এসব ঘটনায় তিনজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের একটি অংশ

এই হামলায় দৃশ্যমান ক্ষতির চেয়ে অদৃশ্য ক্ষতি হয়েছে বেশি। যে আমিরাতকে সবকিছু বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সর্বোচ্চ পর্যয়ের নিরাপদ মনে করা হতো, তাদের সেই সুনামে আঘাত লেগেছে। ফলে বাহরাইনভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক সংস্থা লেক বেক ইন্টারন্যাশনালের ভূ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাইকেল হোরোবিৎস বলেন, এখন আরব আমিরাতকে যুদ্ধে জড়ানোর চেয়ে নিজের নিরাপত্তার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

এদিকে, আমিরাতের ওপর এ ধরনের হামলায় শঙ্কায় পড়ে গেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। কারণ ইয়েমেন এত দূরের লক্ষ্যে যেভাবে হামলার সাহস দেখিয়েছে, ইসরায়েলি অনেকগুলো লক্ষ্য তাদের জন্য এর চেয়ে কাছে হবে।

ইসরায়েলি ওয়েবসাইট ক্যালকালিস্টের মতে, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর দ্বারা ব্যবহৃত ড্রোনগুলো দেড় হাজার কিলোমিটারের মতো দূরত্ব অতিক্রম করেছিল। হামলাটি ছিল দুর্দান্ত ও সাহসী। ইসরায়েলের মাথাব্যথার কারণ হচ্ছে, ইসরায়েলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ইয়েমেনের হামলাকারীদের আওতার মধ্যেই রয়েছে, অর্থাৎ সেগুলোর দূরত্ব আমিরাতের আবুধাবির চেয়েও কম।

অবশ্য এই হামলার মধ্যেও নিজেদের ব্যবসা খুঁজে ফিরছে তেলআবিব। তারা এরই মধ্যে আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা ইস্যুতে পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে। তারা বলছে, যেভাবে ড্রোনের মাধ্যমে আবুধাবিতে হামলা চালানো হয়েছে, তা ঠেকানোর সবচেয়ে ভালো সাফল্য রয়েছে ইসরায়েলেরই। এক্ষেত্রে তারা ফিলিস্তিনের উদাহরণকে সামনে রাখছে।

সৌদিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া জানায়, হুতিদের হামলার পর আরব আমিরাতকে ‘নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা’ সম্পর্কিত সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এক চিঠিতে আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদকে বলেছেন, এই অঞ্চলে চরমপন্থি দলগুলোকে মোকাবেলায় আপনাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় ইসরায়েল। কেননা, আমাদের শক্র অভিন্ন।