আপনি পড়ছেন

৭৫ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকর্মী, যাকে ট্রাকের ধাক্কায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ১৩ দিন কোমায় থাকার পর গত ১৮ জানুয়ারি তিনি মারা যান। তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ যোগ দেয়। কারণ তিনি ছিলেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের আইকন। তার এলাকার প্রতিটি বাড়ি, গাড়ি, রাস্তাকে ইসরায়েলি দখল থেকে রক্ষা করেছিলেন সারাজীবন। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

suleiman al hathalinপড়ন্ত বয়সেও প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন সুলেমান আল হাথালিন

লম্বা ধূসর দাড়ি আর মাথায় একটি সাদা স্কার্ফ বাঁধা। নাম তার সুলেমান আল হাথালিন। ছিলেন অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের একজন আইকন। ইসরায়েলি বর্বরতার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা এক অদৃশ্য ব্যক্তিত্ব।

সুলেমান আল হাথালিনের মৃতদেহ ছিল ফিলিস্তিনি পতাকায় মোড়ানো। বিপুল সংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে দাফন করা হয়েছে তাকে। তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি দীর্ঘকাল ধরে ইসরায়েলি নিপীড়নের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

সুলেমানের ভাগ্নে আজিজ আল-হাথালিন টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, ৫ জানুয়ারি সুলেমানকে উম আল-খাইরে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত করা হয়। যখন ট্রাকটি তাকে ছুঁড়ে ফেলে, তখন সোলেমানের মাথার খুলি, ঘাড় এবং পাঁজরের খাঁচায় ফাটল দেখা দেয়। তিনি ভয়ানক আঘাত পান।

সুলেমানের পরিবার ১৯৪৮ সালে নাকবার সময় নেগেভ মরুভূমির আরাদ এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তারা ১৯৬৫ সালে দক্ষিণ পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি শহর হেবরনের উম আল-খাইর গ্রামে বসতি স্থাপন করে। গ্রামে জমির মালিক হওয়া সত্ত্বেও সুলেমানের পরিবার ১৯৮০ সালে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বাড়ি ভেঙ্গে দেয় এবং সেখানে একটি অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপন করা হয়।

আজিজ টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, বাসিন্দারা সর্বদাই ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার মুখে পড়ত। তারা বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দিত। কিন্তু ইসরায়েলি দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সুলেমানের নেতৃত্বে লড়াই চালিয়ে যায় ফিলিস্তিনিরা। বার্ধক্য সত্ত্বেও সুলেমান অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ কখনও বন্ধ করেননি।

যখনই ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়, তখনই সোলেমানকে দেখা যেত দখলদারদের মুখোমুখি হতে। সুলেমান তার জীবন ফিলিস্তিন এবং এর জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তিনি প্রতিটি বাড়ি, গাড়ি, রাস্তা এবং পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন।

হেব্রনের ইয়ুথ এগেইনস্ট সেটেলমেন্টস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইসা আমরো বলছেন, তিনি ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মোকাবেলা করার জন্য এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় হিজরত করেছেন। তিনি সমস্ত ফিলিস্তিনিদের পিতা।

দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বাবার সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা স্মরণ করে সোলেমানের ছেলে বলেন, ঈদের দিনও বাবা বিশ্রাম নিতে বা পানি খেতে বসতেন না। তিনি প্রতিবাদ চালিয়েই যেতেন। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল দখলদারিত্ব প্রতিরোধ করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ়তাকে শক্তিশালী করা।

আজিজ বলছেন, তারা সুলেমানকে হত্যা করেছে। কিন্তু তিনি হাজারও সুলেমান রেখে গেছেন, তা ইসরায়েল জানে না। আমরা সুলেমানের দেখানো প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, উম্ম আল-খাইর কখনও নতজানু হবে না।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.