আপনি পড়ছেন

রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে কোনো সময় ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠাতে পারেন। এমন হলে ইউক্রেন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে হিংসাত্মক যুদ্ধ শুরু হতে পারে। এর ফলে ইউরোপ মহাদেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ নিরাপত্তা সংকটের দিকে এগিয়ে যাবে। এমন উত্তেজক পরিস্থিতিতে বিশ্বের নজর এখন ইউরোপের দিকে।

russia deployed soldiers ukraineইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন

আহরাম অনলাইনের একটি নিবন্ধে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ বাধলে আরব বিশ্বে ভয়াবহ সঙ্কট তৈরি হবে। যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন উত্তেজনা যদি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয় তাহলে আরব বিশ্বেও এর খারাপ প্রভাব পড়বে। এক্ষেত্রে আরব শাসক ও জনসাধারণ কী ভাবছে তা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পূর্ব ইউরোপে একটি যুদ্ধ আরব বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য সুদূরপ্রসারী পরিণতি বয়ে আনবে।

আরব দেশগুলো মার্কিন-রাশিয়ান স্থবিরতার মধ্যে একটি পাথরের মতো কঠিন স্থানে আটকা পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। তাদের কূটনীতি মধ্যপ্রাচ্যের নতুন ভূ-রাজনীতি এবং পররাষ্ট্রনীতির চ্যালেঞ্জগুলোর জটিলতা একটি সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সমাধানের আলোচনা ব্যর্থ হলে এবং রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে আরব সরকারগুলো কীভাবে তাদের দেশের ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য প্রভাবের মূল্যায়ন করবে তা কেউ জানে না। যদিও একটি পূর্ণ যুদ্ধ এ অঞ্চলে গুরুতর পরিণতি ঘটাবে। এমনকি একটি সীমিত যুদ্ধ হলেও আরব বিশ্ব তার পরিণতি ভোগ করবে।

সামরিক ক্রিয়াকলাপ ছাড়াও সংঘাতটি যে কোনো উপায়ে চলমান থাকতে পারে। তথাকথিত সাইবার-আক্রমণ, হ্যাকিং এবং বিভ্রান্তিমূলক প্রচারাভিযানসহ যেগুলো আরব বিশ্বকে জড়িয়ে শীতল যুদ্ধের নীতিতে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিতে পারে।

অনেক আরব দেশ শক্তিশালী সামরিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপস্থিতিসহ রাশিয়াকে চায়। রাশিয়াও এ অঞ্চলে ব্যাপক সম্পর্ক উপভোগ করতে ইচ্ছুক। পশ্চিমা শক্তিগুলোর তুলনায় একটি বিকল্প অংশীদার হিসাবে রাশিয়া নিজেকে উপস্থাপন করে আসছে বহু বছর ধরে।

যদিও আরব সরকারগুলো এখন পর্যন্ত ইউক্রেন সঙ্কটে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দৃশ্যত রুশ-মার্কিন উভয়পক্ষের সাথে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করে আসছে। এই মনোভাব বাস্তবসম্মত পরিস্থিতি প্রকাশ করে না।

আরবে রাশিয়ার প্রতি কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ মানে হল, ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য নীতিগুলোকে নেতিবাচকভাবে পর্যালোচনা করার প্রবণতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জের মুখে দেখার আকাঙ্ক্ষাকে নির্দেশ করে।

তবে ইউক্রেন সঙ্কটে আরব অবস্থানের অস্পষ্টতা অবশ্যই শেষ হবে। যদি কোনো কূটনৈতিক সমাধান না পাওয়া গেলে আরবরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা রাশিয়ার মধ্যে তাদের মিত্র বেছে নিতে বাধ্য হবে। পশ্চিমা জোট মস্কোর ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে আরব দেশগুলো কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে ওয়াশিংটন ও মিত্ররা যুদ্ধে জড়ালে আরব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আরব দেশগুলোকে এই সংঘাতের বৃহত্তর পরিণতি এবং কীভাবে এটি তাদের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে রাশিয়ান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য পুতিন ভূমধ্যসাগরে তার কূটনীতি প্রসারিত করতে পারেন।

সিরিয়ায় রাশিয়ার নৌ কৌশল বা তার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। লিবিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকায় দেশটির ক্রমবর্ধমান প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বৃহত্তর বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য রাশিয়া একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠতে পারে।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বের অন্যান্য অংশ অর্থনৈতিকভাবে খুব বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হবে না। তবে বিরাট অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে আরব বিশ্ব। এ নিয়ে বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্য অঙ্গনে নানা হিসাব নিকাশ চলছে। ইরান, ইসরায়েল এবং তুরস্ক ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করছে। তিনটি দেশ কৌশলগতভাবে ইউক্রেন সংকটের অর্থ কী হতে পারে তা বোঝার চেষ্টা করছে।

ইতিহাস এই প্রভাবগুলো বোঝার জন্য কার্যকর হতে পারে। যেহেতু মধ্যপ্রাচ্য ২০ শতকের মধ্যে প্রধান শক্তিগুলোর ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষ করে দুটি বিশ্বযুদ্ধের সময় আরব অঞ্চলের পরিণতি ছিল ভয়াবহ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির এক শতাব্দীরও বেশি সময় পরেও এর ক্ষতিকর প্রভাব এখনও সামরিক ও ভূ-রাজনৈতিক উভয়ক্ষেত্রে প্রতিধ্বনিত হয়। আরব বিশ্বের রাজনীতিতেও বিশ্বযুদ্ধটির খারাপ প্রভাব এখনও বিদ্যমান।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.