ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কেবল কূটনীতির মাধ্যমেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে আলোচনার অচলাবস্থার মধ্যে সুর নরম করে এমন মন্তব্য করলেন জেলেনস্কি। খবর বিবিসি।
ভলোদিমির জেলেনস্কি
ইউক্রেনের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধে রক্তারক্তি হবে, লড়াই হবে। তবে এর শেষ হবে কেবল কূটনীতির মাধ্যমে। কিন্তু কাজটি খুব সহজ নয়। কারণ, কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়।
তিনি বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই এ লড়াইয়ের ভবিষ্যত স্থির হবে। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নাকি তাদের ছাড়া, গোষ্ঠীগতভাবে নাকি প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে- কীভাবে সেই আলোচনা হবে তা আমি জানি না। তবে সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই হবে।
দুই পক্ষ কয়েকবার বৈঠকে বসলেও ফল আসেনি
বিস্তারিত উল্লেখ না করে তিনি বলেন, এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো কেবল আলোচনার টেবিলেই সমাধান হতে পারে। আমরা চাই, আগে যেমন ছিল, সব সেভাবে ফিরে আসুক। কিন্তু রাশিয়া তাতে সম্মত নয়। জেলেনস্কির মতে, আলোচনায় নানা বিষয় থাকতে পারে, তবে ইউক্রেনের জন্য তা ন্যায্য হতে হবে।
রাশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে, উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি হিসেবে এটি ইউক্রেনের বন্ধু এবং অংশীদারদের দ্বারাও স্বাক্ষরিত হবে। তিনি এ সময় কিয়েভের পরম শর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মারিওপোলের আজভস্টাল স্টিলওয়ার্কে যারা লড়াই করেছিল, সেসব ইউক্রেনীয় সেনাকে রাশিয়া হত্যা করতে পারবে না।
এর আগে গত মঙ্গলবার কিয়েভের প্রধান আলোচক মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছিলেন, আলোচনা স্থগিত রয়েছে। পরদিন বুধবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য ইউক্রেন সরকারকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, আলোচনা আসলেই এগোচ্ছে না, কারণ ইউক্রেনীয় আলোচকদের ইচ্ছার সম্পূর্ণ অভাব লক্ষ্য করছি।
লড়াইয়ের সমাপ্তি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শেষ বৈঠকটি হয়েছিল পুরো এক মাস আগে, গত ২২ এপ্রিল। এরপর দুই পক্ষ আর আলোচনার টেবিলে বসেনি। এতে আলোচনায় বড় ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ন্যাটোতে যোগদান ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। মারিওপোলের মতো বেশ কিছু শহর রাশিয়ার হামলায় একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তিন মাসব্যাপী এ লড়াইয়ে দুই পক্ষেরই ব্যাপক প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বাস্তুচ্যুত হওয়ার সংখ্যাও কম নয়। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ৬০ লাখ মানুষ। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮০ লাখের বেশি লোক।