গরুর দুধের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাধার দুধ! আয় মাসে ৩ লাখ!

গুজরাটের যুবক ধিরেন সোলাঙ্কি গাধাকে 'অমূল্য সম্পদ' বানিয়ে ফেলেছেন। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! তিনি গাধার দুধ বিক্রি করে প্রতি মাসে আয় করছেন ২-৩ লাখ টাকা! ধিরেনের গাধার খামারে এক লিটার গাধার দুধের দাম ৫ হাজার টাকা। যা গরুর দুধের চেয়ে প্রায় ৭০ গুণ বেশি! গুজরাটে গরুর দুধ বিক্রি হয় মাত্র ৬৫ টাকা লিটার।

গাধার দুধের দাম ৫-৭ হাজার রুপি

কিন্তু কেন গাধার দুধ এত দামি? ধিরেন জানাচ্ছেন, গাধার দুধ দক্ষিণ ভারতের কসমেটিকস কোম্পানিগুলো কিনে নিচ্ছে। কারণ, এই দুধ দিয়ে তৈরি সৌন্দর্যবর্ধক পণ্যগুলো খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও, গাধার দুধের অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে।

ধিরেনের সাফল্যের গল্প: সরকারি চাকরি খুঁজছিলেন ধিরেন। কিন্তু বেসরকারি চাকরি নিয়েই তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তাতে তার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। এ অবস্থায় তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে গাধা পালন সম্পর্কে জানতে পারেন।

কৌতুহলি হয়ে গাধা সম্পর্কে অভিজ্ঞ কয়েকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন। একপর্যায়ে আট মাস আগে ২০টি গাধা নিয়ে তিনি শুরু করেন তার স্বপ্নের খামার। এতে তার বিনিয়োগ ছিল ২২ লাখ টাকা।

গাধার দুধ

শুরুতে গাধার দুধ নিয়ে বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলেন ধিরেন। কারণ গুজরাটে গাধার দুধের কোনো চাহিদা ছিল না। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে একপর্যায়ে দক্ষিণাঞ্চলের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বর্তমানে তিনি কর্ণাটক ও কেরালার কসমেটিকস কোম্পানিগুলোতে গাধার দুধ সরবরাহ করছেন। এসব কোম্পানি তাদের বেশ কিছু কসমেটিকসে গাধার দুধ ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া ধিরেন এ দুধ গুড়াদুধের আকারেও বিক্রি করে থাকেন, যার প্রতি লিটারের দাম পড়ে লাখ রুপির ওপর।

বর্তমানে ধিরেনের খামারে ৪২টি গাধা রয়েছে। তিনি গাধার দুধ তরল ও গুঁড়ো আকারে বিক্রি করেন। গুঁড়ো দুধের প্রতি লিটারের দাম ১ লাখ টাকারও বেশি!

জানা গেছে, কসমেটিকসে ব্যবহার করা ছাড়াও এ দুধের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। লিভারসহ বিভিন্ন সমস্যার জন্য চিকিৎকরা গাধার দুধ খেতে বলেন। নাক থেকে রক্ত পড়া, জ্বর, সংক্রমণেও উপকারী এই গাধার দুধ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও গাধার দুধ বেশ উপকারী। যেসব শিশু অ্যালার্জির কারণে গরুর দুধ খেতে পারে না, তাদের জন্য বিকল্প হিসেবে গাধার দুধ ব্যবহার করা যায়।