আপনি পড়ছেন

আজ মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের দাবি তুললে প্রথমেই উঠে আসে ঐতিহাসিক মহান মে দিবসের কথা। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকদের জীবন উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি ও দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি আসে। ঐতিহাসিক সেই ঘটনার ১৩১তম বার্ষিকী আজ।

শ্রমিক আন্দোলনের এতগুলো বছর পরেও কি দেশে দেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে মেহনতি শ্রমিক জনতা আজও শ্রমের মজুরি না পাওয়ার হতাশায় ভূগছে। ঐতিহাসিক এ দিবসের স্মরণে কর্পোরেট চাকুরিজীবিরা ছুটি কাটালেও দিনমজুর আর মেহনতি মানুষের ১২ মাসের একটি দিনের ছুটি মেলে না। খেটে খাওয়া সেসব মেহনতি মানুষের কষ্টের গল্প গণমাধ্যমে স্থান পায় কেবল মে দিবস এলেই। প্রতি বছরের ন্যায় আজও তাই গণমাধ্যম জুড়ে একদিনের শ্রমিক বন্দনা চলছে। তবে আমাদের আজকের প্রতিবেদন সেই গণমাধ্যম কর্মী তথা গণমাধ্যম শ্রমিকদের নিয়ে।

journalism in bangladesh

গণমাধ্যমকর্মীরা বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমজীবীদের দুঃখগাঁথা নিয়ে নানা প্রতিবেদন, ফিচার, গল্প, গান, কবিতা ও সাহিত্য লিখেন। কিন্তু গণমাধ্যমকর্মীদের বড় অংশের দুঃখগাঁথা রয়েছে। যে গল্প কেউ কোন দিন তুলে ধরে না। কিংবা কেউ সাহস করে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। উল্টো রোষানলে পড়েন মালিক-পক্ষের। মিডিয়া মাফিয়াদের রক্তচক্ষুর শিকার হয়ে চাকরিচ্যুত হয়ে ঘরে ফিরতে হয় শ্রান্ত মিডিয়া শ্রমিকদের।

গত বছর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, দেশে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈ-মাসিক, ষান্মাষিক মিলে মোট ২ হাজার ৮০০টিরও বেশি পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। অনুমোদিত বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ৪১টি। অনুমোদিত এফ এম বেতার ২৮টি এবং কমিউনিটি রেডিওর সংখ্যা ৩২টি। আর অনলাইন রেডিও, টেলিভিশন এবং পত্রিকার কোন নির্দিষ্ট হিসাব নেই। তবে গত বছর তথ্যমন্ত্রী জনিয়েছিলেন ১০৫টি অনলাইন টিভি চ্যানেল, ১৮টি অনলাইন রেডিও এবং এক হাজার ৭১৭টি অনলাইন পত্রিকা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। দেশে বিপুল পরিমাণ এই গণমাধ্যমে কাজ করে লক্ষাধিক গণমাধ্যমকর্মী। কিন্তু এই কর্মীদের কতজন তাদের ন্যায্য বেতন-ভাতা পাচ্ছেন?

চ্যালেঞ্জ নিয়ে সংবাদের পিছনে ছুটে চলে সাংবাদিকরা। সন্ত্রাসী আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে যখন সংঘর্ষ হয় তখন উভয় পক্ষের হাতে থাকে অস্ত্র আর আমাদের হাতে ক্যামেরা, কলম, কাগজ। কিছুদিন আগেই সমকালের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল এমনই একটি ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছেন। এমন অসংখ্য শহীদ শিমুল আছেন যাদের হত্যার বিচার এখনো পায়নি। আবার সংবাদের কারণে প্রতিশোধের হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বহু সাংবাদিক। আহতের সংখ্যার কোন নির্দিষ্ট হিসেব নেই। সাগর-রুনির হত্যাকারীরা তো থেকে গেল ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

নিজের জীবন বিপন্ন করে যারা এভাবে দিনের পর দিন সংবাদ লিখে যান তাদের শ্রমের মূল্য কতটা? প্রশ্ন করেছিলাম দেশের প্রথম সারির একটি পত্রিকায় কর্মরত একজন সাংবাদিককে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, 'প্রকৃত পক্ষে আমরা যারা গণমাধ্যমে কাজ করি তারা বড় ধরনের বেতন বৈষম্যের শিকার হই। আর মালিক-পক্ষের অনিয়মের বিরুদ্ধে লেখা তো অসম্ভব। সে লেখা প্রকাশ তো হবেই না বরং চাকরি খুয়াতে হবে। আর কোন রকম পূর্ব নোটিশ চাড়া হঠাৎ করে চাকরি হারানোর ঘটনা মিডিয়া জগতে অসংখ্য।'

ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানী বলেন, 'সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও এখনো তার বাস্তবায়ন হয়নি। মে দিবসের মূল বিষয় ছিল নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও উপযুক্ত বেতন দাবি। সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে সে বিষয়টি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়তি হয়নি। যদি নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়িত হয় তবে সাংবাদিকদের শ্রম এবং ত্যাগের নূন্যতম মূল্যায়ন করা হবে।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফরহাদ উদ্দিন বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা পড়ালেখার পাশাপাশি সাংবাদিকতা নামক মহৎ পেশাটির দিকে ঝুঁকে। প্রতিদিন সকাল, বিকেল কিংবা রাতেও ক্যাম্পাসে কোন ঘটনা ঘটলে সেখানে গিয়ে তারা সংবাদ সংগ্রহ করে।ক্যাম্পাসের নানা প্রোগ্রামের পাশাপাশি শহীদ মিনার, শাহবাগ, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ সহ আশপাশের এলাকার সংবাদও সংগ্রহ করে একজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক। এত কাজ করার পরও তাদের বেতন সবচেয়ে কম। একটি প্রথম সারির দৈনিক একজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদককে বেতন দেয় দুই হাজার টাকা যা তার মোবাইল বিলও হয়না। আবার অনেক অফিসে তাদের বসার জায়গা টুকুও হয় না। যথাযথ মূল্যায়নের অভাবে বাধ্য হয়ে অনেকেই সাংবাদিকতা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নেন।'

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবজমিনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফররুখ মাহমুদ বলেন, 'আমরা যে পরিমাণ পরিশ্রম করি সে তুলনায় আমাদের বেতন-ভাতা একেবারেই কম। এটা শ্রমের বৈষম্য। আমরা পরিশ্রম করি কিন্তু তার যথাযথ মূল্যায়ন নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিদের নবম ওয়েজ বোর্ডের অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানাই।'

বাংলাদেশ প্রতিদিনের বার্তা সম্পাদক লুৎফর রহমান হিমেল বলেন, সাংবাদিকরা সবার বৈষম্যের কথা লিখে। নিজেরটা লিখে না। যারা সংবাদের পিছনে ছুটে বেড়ায় তারা কর্মঘণ্টা মাথায় নিয়ে কাজ করে না। সাংবাদিকদের কাজ করতে হয় ২৪ ঘণ্টায়েই। কিন্তু সেই অনুযায়ী তারা সম্মানী পায় না। এতসব ত্যাগ স্বীকার করে তারা কাজ করে যায় বলেই সাংবাদিকতাকে মহান পেশা বলা হয়।

ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সহ-সম্পাদক যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ বলেন, 'গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ওয়েজ বোর্ড থাকলেও তা সব প্রতিষ্ঠানে ঠিকভাবে দেয়া হয় না। আর এ বছর নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করার কথা থাকলেও এখনো কোন ঘোষণা আসেনি। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকরা বড় ধরনের বেতন বৈষম্যের শিকার হন।'

বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা শুধু মাত্র কম বেতন-কাঠামোর কারণে তাদেরকে লুকিয়ে ছদ্মনামে একাধিক গণমাধ্যমে কাজ করতে হয়। একাধিক জায়গায় কাজ করার ফলে সারাদিন কোন অবসর সময় পাওয়া যায় না। আর যদি কখনো একাধিক হাউজে কাজ করার তথ্য ফাঁস হয়ে যায় তবে চাকরি হারাতে হয় সংবাদকর্মীদের। গণমাধ্যমের নামে এক ধরণের প্রতারণা ব্যবসা করে বেড়ায় এক শ্রেণির তথাকথিত গণমাধ্যম। অভিযোগ আছে সংবাদকর্মীদের বেতন না দিয়ে তাদের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে মাসের পর মাস পার করে কিছু গণমাধ্যম। আশিক আহমেদ (ছদ্মনাম) নামে একজন সাংবাদিক জানান, তিনি দীর্ঘ আট মাস দেশের প্রতিষ্ঠিত একটি অন লাইনে কাজ করেছেন। চার মাসের পর থেকে তাকে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে আট মাস পর্যন্ত কাজ করিয়েছে। পরে তিনি দেশের অন্য একটি গণমাধ্যমে কাজ নেন।

সংবাদ কর্মীদের সাথে প্রতারণা করার এমন অসংখ্য ঘটনা আছে । নতুন সংবাদ কর্মী নেওয়ার নাম করে বছরের প্রথম ছয় মাস পরীক্ষামূলক বলে প্রতিবেদন পাঠানে বলা হয় সংবাদকর্মীদের। প্রথম ছয় মাস শেষ হওয়ার কিছু দিন আগেই ব্যর্থতার অভিযোগ এনে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য নেয়া হয় নতুন কর্মী। এভাবে বছরের পর বছর বিনা বেতনে সংবাদকর্মীদের খাটিয়ে চলছে বহু প্রতারক গোষ্ঠী। আনিছুর রহমান নামে এক মফস্বল সংবাদকর্মী অভিযোগ করে বলেন, 'অফিস থেকে প্রায় সময়ই নিউজের জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু ভালো নিউজ হলে কখনোই সম্মান করেনা অফিস কৃতপক্ষ। গুটি কয়েক অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকা ভাতা দিলেও, তাদের অনেকেই আবার সময়মত দেয় না, ধাপে ধাপে ছিড়ে ছিড়ে বেতন দেয়। আর মাঝে মধ্যে নিউজ নিয়ে ঝামেলা করে প্রতিক্রিয়াশীলরা। কিন্তু সব সমস্যা নিজেকেই পোহালে হয়।'

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শহীদুল হক পাইলট বলেন, 'স্থানীয় পত্রিকা এবং স্থানীয় সাংবাদিক উভয়ের অবস্থান বর্তমানে হুমকির মুখে। যারা ঢাকায় সাংবাদিকতা করেন তারা অফিস থেকে ক্যামেরা পান, সাপ্তাহিক ছুটি পান, উচ্চ বেতন পান, আর নির্ধারিত শিফটে কাজ করেন। রাতের কোন দুর্ঘটনা ঘটলে রাতের শিফটে যিনি থাকেন তিনি সেই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করেন। আর আমরা যারা মফস্বলে কাজ করি তাদের দিন নেই, রাত নেই সংবাদের জন্য ছুটে যেতে হয়। আমাদের কোন সপ্তাহিক ছুটি নেই। যে কোন মুহূর্তে যে কোন ঘটনার জন্য আমাদের ছুটে যেতে হয়। আবার আমাদের কাজের ঝুঁকিও বেশি। আজ মে দিবসেও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'ঢাকা থেকে কোন সাংবাদিক জনপ্রতিনিধি বা স্থানীয় কোন ঘটনার জন্য প্রতিবেদন করলে তার জবাবদিহি করতে হয় আমাদের। আমাদের পরিবার ও জীবন সব সময় হুমকির মুখে থাকে। অথচ আমাদের স্থানীয় সাংবাদিকদের বেতন খুবই কম। হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ সংবাদ মাধ্যমই তিন হাজার টাকার মত বেতন দেয়। একটি ইউনিয়নে সংবাদের তথ্যের জন্য গেলে আমাদের খরচ হয় ৫০০-৬০০টাকা। অনেক সময় একাধিকবার যেতে হয়। আর জাতীয় পত্রিকার পাশাপাশি স্থানীয় পত্রিকায় কাজ করার সুযোগও দিন দিন কমে যাচ্ছে। কারণ স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার সুযোগ কমিয়ে আনা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে এই চরম বৈষম্যের সমাধান দাবি করছি।'

এই মফস্বল সাংবাদিক জানান, ক্ষমতা এবং অর্থের জোরে অনেকেই প্রকাশক, সম্পাদক এবং চ্যানেলের মালিক বনে যাওয়ায় সংবাদ ও সাংবাদিকতা চরম নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি ও গোষ্ঠি স্বার্থে সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের ব্যবহার করছে। যা সত্য ও স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য চরম হুমকি।

সর্বশেষ ২০১২ সালে সংবাদপত্রের কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে অন্তর্বর্তীকালীন মহার্ঘ্য ভাতা ঘোষণা করেছিল সংবাদপত্রের অষ্টম মজুরি বোর্ড। ২০১৩ সালে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে সরকারি চাকুরেদের জন্য অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদন করে সরকার। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সশস্ত্র বাহিনীর জন্যও নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই সাংবাদিকরা সরকারি বেতন কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের দাবির মুখে গত বছর তথ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন ২০১৭ সালের মধ্যে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা দিবেন। তবে এখনো পর্যন্ত সে আশ্বাসের বাস্তবায়ন লক্ষ করা যায়নি। তবে সংবাদকর্মীদের ন্যয্য বেতন ভাতা প্রদানের জন্য সরকার দ্রুত নবম ওয়েজ বোর্ড গঠনসহ যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যাশা করছেন সাংবাদিকরা।

প্রতিবেদনটি তৈরি করতে সাহায্য করেছেন প্রান্ত রনি।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.