পড়াশুনার জন্য কিশোরের অদম্য লড়াই!

প্রতিদিন সকালে বই-খাতা, চেয়ার-টেবিল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় এক কিশোর। তারপর পায়ে হেঁটে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে শুরু করে অনলাইন ক্লাস। দুপুরে ক্লাস শেষে ফের নেমে আসে নিচে। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই পড়াশুনা করছে বছর ১২’র কিশোর হরিশ।

এভাবেই পাহাড়ের চূড়ায় বসে প্রতিদিন ক্লাস করে হরিশ

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবেলায় বিশ্বের অনেক দেশেই এখনো চালু হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই বলে বন্ধ নেই পড়াশুনা। তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক দেশেই চলছে অনলাইন ক্লাস। ব্যতিক্রম নয় ভারতও। দেশটিতে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্মসূচি চালু রাখা হয়েছে। কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার এ দেশটির অনেক জায়গায় এখনো ঠিকমতো পাওয়া যায় না নেটওয়ার্ক। ফলে অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন অনেকে।

তেমনি একজন রাজস্থান রাজ্যের বারমার জেলার পাঁচপাদরা গ্রামের বাসিন্দা হরিশ। গ্রামে নেটওয়ার্ক না থাকায় অনলাইনে ক্লাস করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে স্থানীয় জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী। কিন্তু পড়াশুনার অদম্য ইচ্ছা তাকে আটকে রাখতে পারেনি। তাইতো প্রতিদিন বই-খাতা, চেয়ার-টেবিল নিয়ে উঠে পড়ে পাহাড়ে। কারণ পাহাড়ের উপর উঠলেই ঠিকমতো নেটওয়ার্ক পায় সে।

বীরেন্দ্র শেবাগের টুইটার পোস্ট

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ে হরিশ। তারপর পায়ে হেঁটে ৮টার মধ্যে উঠে পড়ে পাহাড়েরর চূড়ায়। সেখানেই দুপুর ২টা পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস করে সে। তার আবার সবকিছু গুটিয়ে নেমে আসে পাহাড় থেকে। অনলাইন ক্লাস চালু হওয়ার পর গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই পড়াশুনা করছে সে।

হরিশ জানায়, তাদের গ্রামে নেটওয়ার্ক নেই। শুধু ওই উঁচু পাহাড়ের উপর উঠলেই নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। তাই অনেক ভেবে-চিন্তে শেষ পর্যন্ত মনস্থির করে যে, প্রতিদিন পাহাড়ে উঠেই অনলাইনে ক্লাস করবে। কারণ নিয়মিত ক্লাস না করলে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়বে সে। পড়াশুনা করে আইএএস হওয়া স্বপ্ন তার।

এদিকে পড়াশুনা নিয়ে হরিশের এই অদম্য লড়াইয়ের গল্প ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। তার ছবি নিজের টুইটার একাউন্টে শেয়ার করেছেন খোদ সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেবাগও।

 (হরিশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে শেবাগ টুইটারে লেখেন, প্রতিদিন পাহাড়ে উঠে অনলাইনে ক্লাস করা এই শিক্ষার্থীর লড়াই সত্যিই প্রশংসনীয়। তার পাশে থাকতে চাই। প্রয়োজনে তাকে সাহায্য করতে চাই।