যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকরা করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। লক্ষণগুলোর মাত্রা ও প্রভাব পর্যালোচনা করে তারা ছয়টি বিভাগ করেছেন। সম্প্রতি তাদের এই গবেষণা মেডিকেল সাময়িকী মেডআরএক্সভিতে প্রকাশ হয়েছে।

doctors testing ventilatorsকরোনার লক্ষণের ৬টি বিভাগ করলেন গবেষকরা

দ্য গার্ডিয়ানের বরাতে জানা যায়, দ্য টিম’স অ্যাপের ব্যবহারকারীদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। গবেষকরা এই অ্যাপ ব্যবহারকারী ১ হাজার ৬৫৩ জন করোনারোগীর লক্ষণ ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার তথ্য সংগ্রহ করে তার পর্যালোচনা করেছেন।

গবেষকরা বলছেন, তাদের এই ৬টি বিভাগ পর্যালোচনা করলেই একজন রোগী বুঝতে পারবেন তার হাসপাতালে যাওয়ার দরকার আছে কি নেই। এতে করে হাসপাতালগুলোর ওপরও চাপ কমে যাবে। চিকিৎসকরা সাচ্ছন্দে কাজ করে যেতে পারবেন।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া কিংস কলেজের অধ্যাপক টিম স্পেক্টর বলেন, আমাদের এই গবেষণা চিকিৎসকদেরও অনেক উপকারে আসবে। গুরুতর নয়, এমন অনেক রোগী অতীতে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। এখন লক্ষণগুলো পর্যালোচনা করে চিকিৎসকরা সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। মৃত্যু কম হবে বলে আশা করা যায়।

pandemic symbolic picture03করোনাভাইরাসের প্রতীকী ছবি

আরেক গবেষক ডক্টর ক্ল্যারি স্টিভস বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো আমরা ৬টি বিভাগে ভাগ করে দেখলাম সবার শ্বাসনালীর জন্য সাহায্য অর্থাৎ অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয় না।

প্রথম বিভাগ

এই বিভাগে রোগীদের শ্বাসনালী ও ফুসফুসের উপরের দিকে সংক্রমণ হয়। আক্রান্তদের লক্ষণগুলোর সাধারণত শুকনো কাশি, মাংসপেশীতে ব্যথা থাকে। মোট রোগীর ১ দশমিক ৫ শতাংশ রোগীর ভেন্টিলেশন কিংবা অক্সিজেন প্রয়োজন। এছাড়া মাত্র ১৬ শতাংশ রোগীর হাসপাতালে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। গবেষণায় সবচেয়ে বেশি রোগী ছিল এই বিভাগের আওতায় ৪৬২ জন।

দ্বিতীয় বিভাগ

এই বিভাগেও রোগীদের শ্বাসনালী ও ফুসফুসের উপরের দিকে সংক্রমণ হয়। রোগীদের মধ্যে খাবারে অনীহা, জ্বরের লক্ষণ দেখা গেছে। এই বিভাগের রোগীদের ৪ দশমিক ৪ শতাংশের ভেন্টিলেশন কিংবা অক্সিজেন প্রয়োজন হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

তৃতীয় বিভাগ

এই বিভাগের রোগীদের পেটে গ্যাসজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম ডায়রিয়া। সঙ্গে মাংপেশীর ব্যথাও আছে। এই বিভাগের রোগীদের ৩ দশমিক ৭ শতাংশের ভেন্টিলেশন কিংবা অক্সিজেন প্রয়োজন হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে ২৪ শতাংশ রোগী।

চতুর্থ বিভাগ

এই বিভাগের রোগীদের মধ্যে শুরু থেকেই অবসাদ লক্ষ্য করা গেছে। সেইসঙ্গে বুকে ব্যথা ও কাশি ছিল। এই বিভাগের রোগীদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬ শতাংশর ভেন্টিলেটর কিংবা অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছে। হাসপাতালে যেকে হয়েছে ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ রোগীর।

পঞ্চম বিভাগ

সিদ্ধান্তহীনতা, খাবারে অনীহা, তীব্র অবসাদের মতো লক্ষণ দেখা গেছে এই বিভাগের রোগীদের মধ্যে। আক্রান্তদের ৯ দশমিক ৯ শতাংশের অক্সিজেন কিংবা ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়েছে। হাসপাতালে যেতে হয়েছে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ রোগীর।

ষষ্ঠ বিভাগ

তীব্র বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, সেইসঙ্গে ফুসফুস ও শ্বাসনালীতে সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে এই বিভাগের রোগীদের মধ্যে। এছাড়া সিদ্ধান্তহীনতা, অবসাদ ও পেটে গ্যাসজনিত সমস্যাও কিছু কিছু রোগীর মধ্যে পাওয়া গেছে। এই বিভাগের ২০ শতাংশ রোগীর ভেন্টিলেটর কিংবা অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল। ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশের হাসপাতাল যাওয়ার প্রয়োজন হয়েছে। কিন্তু গবেষণায় সবচেয়ে কম রোগী পাওয়া গেছে এই বিভাগে ১৬৭ জন।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.