সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এখন বাস্তব!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফর একটি বড় প্রভাব সৃষ্টি করেছে। তার সফর ঘিরে ইসরায়েলের সাথে সৌদির যতটুকু বিরোধ ছিল তাও মিটে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন যেসব সমস্য ঝুলে ছিল, বাইডেনের সফরে সেগুলো সমাধান দেখা যাচ্ছে। এরকম দুটি সমস্য হল, সৌদিতে ইসরায়েলের সরাসরি ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা এবং লোহিত সাগরের তিরান ও সানাফির দ্বীপ নিয়ে সংকট। এএফপি, রয়টার্স, টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ইসরায়েল ও সৌদি আরবের পতাকা

ইসরায়েল আশা করছে, বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন সূচনা হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০২০ সালে মার্কিন সমর্থনে আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয় ইসরায়েল।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তা করতে সম্মত হয়েছিল, কিন্তু খার্তুম এখনও চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে পারেনি। ১৯৯৪ সালে জর্ডানের সাথে ইসরায়েলের শান্তি চুক্তি এবং মিশরের সাথে ১৯৭৯ সালের চুক্তির কয়েক দশক পর এ ধরনের কূটনৈতিক অগ্রগতি আসল।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

জানা যাচ্ছে, বাইডেনের সফরের পর ওই সমস্য দুটির সমাধান হচ্ছে, যার সুবিধাভোগী হবে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে ইসরায়েল থেকে সৌদিতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে তিরান ও সানাফিল দ্বীপ মিশর থেকে সৌদির কাছে হস্তান্তরে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। কারণ দীর্ঘদিন ইসরায়েলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা লোহিত সাগরের দ্বীপ দুটিকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু মিশর তাতে রাজি হয়নি। এখন দ্বীপ দুটি সৌদির হাতে আসলে ইসরায়েল সুবিধা পেতে পারে।

দ্বীপ দুটির মাধ্যমে ইসরায়েলি বন্দর আইলাতে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বর্তমানে দ্বীপ দুটি মিশরের দখলে রয়েছে। কায়রো কয়েক বছর আগে আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে এগুলো রিয়াদের কাছে হস্তান্তর করতে রাজি হয়েছিল। পরে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। মিশরের সাথে ইসরায়েলের ১৯৭৯ সালের শান্তি চুক্তির শর্তানুযায়ী, দ্বীপ দুটি সৌদির কাছে হস্তান্তরে ইসরায়েলকে ইচ্ছাকৃত অনুমোদন দিতে হবে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মিশর সৌদি আরবের কাছে দ্বীপ দুটি হস্তান্তর করলে ইসরায়েলের ‘কোনো আপত্তি’ নেই বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়ে দিয়েছে। এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সৌদি আরব শিগগির ইসরায়েলি এয়ারলাইন্সগুলোতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ফ্লাইটের অনুমতি দেবে। অপরদিকে মক্কায় বার্ষিক হজ যাত্রায় অংশগ্রহণকারী মুসলমানদের জন্য ইসরায়েল থেকে সরাসরি চার্টার ফ্লাইটের অনুমতিও দেবে সৌদি।