পোল্যান্ডের জঙ্গলে ৮ হাজার মানুষের দেহভস্ম!

পোল্যান্ডের একটি জঙ্গলের দুটি গণকবর থেকে কমপক্ষে আট হাজার মানুষের দেহভস্ম পাওয়া গেছে। দেহভস্মের মোট পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৭ টন। দাবি করা হচ্ছে, ওই দেহভস্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত ইহুদিদের। খবর বিবিসি।

এই জঙ্গলেই পাওয়া যায় গণকবর

পোল্যান্ডের নাৎসি দখল এবং কমিউনিস্ট যুগে সংঘটিত অপরাধের তদন্তকারী সংস্থা ইনস্টিটিউট অফ ন্যাশনাল মেমব্রেন্স জানিয়েছে, দেহভস্মগুলো রাজধানী ওয়ারশোর উত্তরে বিয়ালুকি জঙ্গলে সোলদাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কাছে খুঁজে পাওয়া গেছে, যা বর্তমানে দিজিলয়ালদো নামে পরিচিত।

১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পোল্যান্ড দখল করার সময় নাৎসি জার্মানিরা শিবিরটি তৈরি করেছিল। শিবিরটিকে ইহুদি, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং পোলিশ রাজনৈতিক অভিজাত সদস্যদের জন্য ট্রানজিট, বন্দীকরণ এবং নির্মূল করার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি দৃশ্য

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, গণকবরে সমাহিত করা নিহতদের সম্ভবত ১৯৩৯ সালের দিকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৪৪ সালে বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে নাৎসি কর্তৃপক্ষ যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ মুছে ফেলার জন্য ইহুদি বন্দীদের মৃতদেহগুলো উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়।

তদন্তকারী টমাস জানকোস্কি জানান, মাটি থেকে ১০ ফুট গভীরে দুটি গণকবর থেকে প্রায় ১৭ দশমিক পাঁচ টন (১৫ হাজার ৮০০ কেজি) দেহভস্ম পাওয়া গেছে। এর অর্থ সেখানে কমপক্ষে আট হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। মোটামুটি হিসেবে একটি ভস্মীভূত দেহের ছাইয়ের ওজন দুই কেজি হতে পারে।

জানকোস্কি আরো বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার হত্যাকাণ্ডের আলামত গোপন করতেই দেহাবশেষগুলো সেখানে কবর দেওয়া হয়। দেহভস্মের ডিএনএ পরীক্ষা করা হলে এ ব্যাপারেও আর তথ্য পাওয়া যেতে পারে। পোমেরানিয়ান মেডিকেল ইউনিভার্সিটির জেনেটিক্স গবেষক আন্দ্রেজ ওসোস্কি বলেন, ছাই থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো একটি পরীক্ষাগারে অধ্যয়ন করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আধপোড়া কাপড়, বোতাম ও অন্যান্য সামগ্রীও। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার আগে মৃতদের থেকে সামগ্রী লুট করে তারপর তাদের দেহগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে। ফলে আরও মানুষের দেহাবশেষ সেখানে বা অন্য কোথাও পাওয়া যেতে পারে।