ভারতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ, ফল বৃহস্পতিবার

বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ হিসেবে পরিচিত ভারতে আজ সোমবার (১৮ জুলাই) প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফল ঘোষিত হবে আগামী বৃহস্পতিবার। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ জুলাই। খবর আনাদোলু।

দ্রৌপদী মুর্মু ও যশবন্ত সিনহা

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন লড়ছেন দুজন। ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) প্রার্থী হিসেবে আছেন আদিবাসী নারী দ্রৌপদী মুর্মু। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলোর মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকারের সাবেক মন্ত্রী, সিনিয়র রাজনীতিবিদ যশবন্ত সিনহা।

ভারতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন পরোক্ষ ভোটে। এতে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের ৭৭৬ জন সদস্য ও ২৮টি প্রাদেশিক পরিষদ এবং কেন্দ্রীয়ভাবে শাসিত একটি নির্বাচনী কলেজের ৪০৩৩ সদস্য ভোট দেন। 

ভারতের পার্লামেন্ট

ক্ষমতাসীন জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু পূর্ব ওড়িশা রাজ্যের বাসিন্দা। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি একজন শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। পরে তিনি বিজেপির বিধায়কও ছিলেন। ৬৪ বছর বয়সী এই নারী অতীতে ক্ষমতাসীন দলের উপজাতি শাখার সহ-সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিরোধীদলীয় প্রার্থী যশবন্ত সিনহা একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। অতীতে অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দীর্ঘদিন বিজেপির হয়ে রাজনীতি করা যশবন্ত ২০০২-০৪ সাল পর্যন্ত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি দুই দফায় ১৯৯০-৯১ এবং ১৯৯৮-২০০২ সাল মেয়াদে ভারতের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন।

সম্প্রতি তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার নীতির কঠোর সমালোচক হয়ে উঠেছেন এবং পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসে (টিএমসি) যোগ দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করার পর থেকে সিনহা বলে আসছেন, এ নির্বাচন হচ্ছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই।

বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা মনে করেন, শিবসেনা সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় রাষ্ট্রপতি পদে দ্রৌপদী মুর্মুর নির্বাচিত হওয়া প্রায় মীমাংসিত বিষয়। নির্বাচিত হলে তিনি হবেন প্রথম আদিবাসী ব্যক্তি যিনি দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন।

ভারতে প্রেসিডেন্ট পদটি একটি আনুষ্ঠানিক পদ। তিনি সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থার নেতৃত্ব দেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডারও হন। সংসদে পাস হওয়া সব বিলই আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের সম্মতি পাওয়ার পর আইনে পরিণত হতে পারে। এমনিতে পদটির তেমন গুরুত্ব না থাকলেও বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনে দলগুলো সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে এবং জোট বা সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে চাইলে প্রেসিডেন্টের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে ভারতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিনই হবে ভোট গণনা। বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট এম বেঙ্কাইয়া নাইডুর মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে ১০ অগাস্ট।

ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে অংশ নেবেন রাজস্থানের ভূমিপুত্র জগদীপ ধনকড়। অন্যদিকে বিরোধীরা প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছেন রাজস্থানের সাবেক রাজ্যপাল মার্গারেট আলভাকে। কংগ্রেস নেত্রী হিসেবে পরিচিত আলভা উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও গুজরাটের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এছাড়া ৫ বারের পার্লামেন্ট সদস্যও ছিলেন তিনি।