আপনি পড়ছেন

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টানাপড়েনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করছে সেদেশের তরুণ প্রজন্মের একাংশ। বিশেষত পাঞ্জাব উপনির্বাচনে পিটিআই ও জোট শরিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পরও পাকিস্তান মুসলিম লীগের হামজা শাহবাজকে মুখ্যমন্ত্রী করায় রাজনীতিতে সামরিক-বেসামরিক এস্টাবলিশমেন্টের হস্তক্ষেপের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তরুণরা।

pak twsd পাকিস্তানের রাজনীতি সচেতন তরুণ-তরুণীরা বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করছেন

গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুক ও টুইটারে দেওয়া পোস্টে পাকিস্তানের রাজনীতি সচেতন তরুণ-তরুণীরা ১৯৭১ সালের প্রেক্ষাপট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জুলফিকার আলি ভুট্টো ও ইয়াহিয়া খানের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করছেন।

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকারকে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারদের অনেকে বিষয়টিকে বেসামরিক-সামরিক ক্যু হিসেবে অভিহিত করেছেন। ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি এস্টাবলিশমেন্ট একইভাবে একাট্টা হয়েছিল বলে তারা উল্লেখ করেন।

ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটগ্রহণে স্পিকার আয়াজ সাদিককে বাধ্য করতে গত ৮ এপ্রিল রাতে ইসলামাবাদে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে প্রিজন ভ্যান নেওয়া হয়। ভোট গ্রহণ না করলে স্পিকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার ঘোষণা দেন পিএমএল-এন ও পিপিপি নেতারা। নজিরবিহীনভাবে রাত ১২টায় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ও ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দরজা খুলে এজলাসে বসেন বিচারকরা।

এদিকে একই সময়ে সামরিক হেলিকপ্টার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারি বাসভবনের লনে অবতরণ করেন পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। দেশটির সামরিক সংস্থা আইএসআইর প্রধান এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর চাপপ্রয়োগের উদ্দেশে সেনাপ্রধান মধ্যরাতে তার বাসভবনে যান বলে অভিযোগ পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের। যদিও সশস্ত্র বাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর আইএসপিআর এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানাতে সেনাপ্রধান সেখানে গিয়েছিলেন।

আইএসপিআরের ব্যাখ্যা যা-ই হোক, পাকিস্তানের রাজনীতি-মনস্ক তরুণরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ অব্যাহত রেখেছেন। চলতি সপ্তাহে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের উপনির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও চাপপ্রয়োগের অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা বলছেন, ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সামরিক কর্মকর্তারা এমন একগুঁয়ে অবস্থান নিয়েছিল। গত ৪৮ ঘণ্টায় বিপুল সংখ্যক তরুণ ১৯৭১ সালের প্রেক্ষাপট এবং জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ইয়াহিয়া খানের বিভিন্ন মন্তব্য উদ্ধৃত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। জনগণের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি এমন অশ্রদ্ধার মনোভাব অব্যাহত থাকলে পাকিস্তান আবারও ভাঙনের দিকে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে স্কট কার্নি ও জ্যাসন মিকিলানের বই দ্য ভোর্টেক্স থেকে উব্ধৃতি দিয়ে উমর নামে একজন ইউজার লেখেছেন, ‘ভুটো ইয়াহিয়া খানকে বলেছেন, সৈনিক ও রাজনীতিকদের নিয়ে খুব ভালো টিম হবে। পূর্ব পাকিস্তান কোনো সমস্যাই না।’ ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এক বৈঠক শেষে ইয়াহিয়া বলেন, ‘আমাদেরকে মুজিবের মাথায় হুঁশ ফেরাতে হবে। এজন্য আওয়ামী লীগকে দমনের পরই পরিষদের অধিবেশন ডাকতে হবে।’

আরেকজন ইউজার আসাদ কিয়ানি লেখেছেন, ‘১৯৬৫ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিব ফাতিমা জিন্নাহকে সমর্থন করেছিলেন। পাকিস্তানের সূচনার পর থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাদের ভবিষ্যত চুরি করে নিচ্ছে।’

৭ মার্চের ভাষণের ফুটেজ শেয়ার করে টুইটার ইউজার ইমরান ওয়ানি লিখেছেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে মুজিব নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান। কিন্তু তাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে সামরিক জান্তা তাকে কারাগারে পাঠায়। বর্তমান সামরিক নেতৃত্বও ১৯৭১ সালের রাজনৈতিক ভুলের পুণরাবৃত্তি না করে ছাড়বে না।’

নাদিয়া টুইট করেছেন, ‘১৯৭১ সালে পিপিপি শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যান্ডেট চুরি করেছিল, যে কারণে পাকিস্তান ভেঙেছিল। এবারও পিপিপি আমাদের ম্যান্ডেট চুরি করছে এবং জনগণের সঙ্গে এস্টাবলিশমেন্ট ও রাজনীতিকদের ফাটল তৈরি করছে।’

নাভিদ নাদিম নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘পিটিআই-পিএমএল-কিউ যদি পাঞ্জাবে সরকার গঠনে সফল হতো, তাহলে ইমরান খান হতেন ৫০ বছরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে মাথানত করতে বাধ্য করা প্রথম সিভিলিয়ান। এ কাজটি করতে পেরেছিলেন একমাত্র মুজিব, যখন তাকে ন্যায়সঙ্গত ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.