আবারও বিক্ষোভকারীদের দখলে ইরাকি পার্লামেন্ট

প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরু ও রাজনীতিক মুকতাদা আল-সদরের কয়েকশো সমর্থক আজ শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ইরাকের পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েছে। চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটল।

কয়েক বছর ধরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মুকতাদা আল-সদর

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী পদে মোহাম্মদ আল-সুদানির মনোনয়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে সদর সমর্থকরা। চলতি সপ্তাহের শুরুতে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কোঅর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক ব্লক পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ আল-সুদানিকে মনোনীত করে।

কোঅর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক গ্রুপের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বুধবার রাতে মুকতাদা আল-সদর সমর্থকরা বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনের নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে। পরে মুকতাদা সদরের নির্দেশ পেয়ে মধ্যরাতে তারা ভবনটি ছেড়ে যায়।

নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য আজ শনিবার অধিবেশনে বসেছে ইরাকের পার্লামেন্ট। এর আগে পার্লামেন্ট ভবন ও আশেপাশের এলাকার নিরাপত্তা জোরদারে বাড়তি সৈন্য ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ শনিবার দুপুরে কয়েকশো বিক্ষোভকারী মিছিল নিয়ে বাগদাদের গ্রিন জোনের দিকে অগ্রসর হয়। নিরাপত্তারক্ষীরা তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা গ্রিন জোনের প্রবেশপথে নিরাপত্তাবাহিনীর বসানো সিমেন্ট ব্যারিকেড দড়ি দিয়ে টেনে সরিয়ে পার্লামেন্টে ফেলে। এরপর তারা গ্রিন জোনের অভ্যন্তরে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে।

বিক্ষোভকারীদের একজন রাদ সাবিত স্কাই নিউজকে বলেন, আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক শ্রেণিকে হটাতে ও পার্লামেন্ট অধিবেশন ঠেকাতে এখানে এসেছি। আমরা ওদের সরকার গঠন করতে দেবো না।

জানা গেছে, কোঅর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক ব্লক নামে পরিচিত রাজনৈতিক জোটটি ইরান-সমর্থিত দলগুলোকে নিয়ে গঠিত। এই জোটকে ক্ষমতায় আসতে দিতে চান না বর্তমানে সৌদি সমর্থনপুষ্ট রাজনীতিক মুকতাদা আল সদর। একসময় ইরানের সমর্থন পেলেও গত কয়েক বছর ধরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মুকতাদা সদর।

গত বছর অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে মুকতাদা সদরের নেতৃত্বাধীন দল এককভাবে সর্বোচ্চ আসন পেলেও প্রতিদ্বন্দ্বী শিয়া উপদলগুলোকে বাদ দিয়ে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের ছিল না। সরকার গঠনে জোট বাঁধতে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনায় সফল হতে না পেরে জুন মাসে তিনি হাল ছেড়ে দেন। এরপর অন্য দলগুলো মিলে কোঅর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক ব্লক নামের জোট গঠন করে।