আপনি পড়ছেন

স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসিক ভবনে অস্ত্রশস্ত্র রেখে এসব স্থাপনা থেকে গোলাবর্ষণ ও যুদ্ধ পরিচালনার মাধ্যমে ইউক্রেনীয় বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আজ বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছে।

russia ukraine war lprখোলা জায়গা ও সামরিক স্থাপনার পরিবর্তে আবাসিক এলাকা থেকে যুদ্ধ পরিচালনার মাধ্যমে ইউক্রেনীয় বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

ইউক্রেনীয় বাহিনীর এমন যুদ্ধকৌশল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন এবং এতে করে বেসামরিক নাগরিকরা যুদ্ধের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যশনাল। এভাবে বেসামরিক স্থাপনা ও আবাসিক ভবন থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণের জেরে তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে রুশ বাহিনীর পাল্টা হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি ও স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগ্নেস কালামারদ বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকিতে ফেলছে এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় থেকে যুদ্ধ পরিচালনার মাধ্যমে যুদ্ধের আইন লঙ্ঘন করছে, এমন চর্চার প্রমাণ আমরা পেয়েছি ও নথিবদ্ধ করেছি।

তিনি বলেন, রক্ষণাত্মক অবস্থানে আছে বলেই ইউক্রেনীয় বাহিনী আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার দায় থেকে মুক্ত থাকবে, বিষয়টা এমন নয়।

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ইউক্রেনের আবাসিক এলাকা ও স্থাপনায় রুশ বাহিনীর হামলার প্রতিটি ঘটনাই যে ওইসব এলাকা থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর আক্রমণের প্রত্যাঘাত হিসেবে ঘটেছে, তা নয়। কিছু কিছু জায়গায় রুশ বাহিনী যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে অ্যামনেস্টি নির্ণয় করেছে। যেমন- খারকিভের কিছু জায়গায় রুশ বাহিনী হামলা করেছে যেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনীর উপস্থিতির কোনো প্রমাণ সংস্থাটি পায়নি।

গত এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে অ্যামনেস্টির গবেষকরা খারকিভ, ডনবাস ও মাইকোলায়েভে রুশ আক্রমণের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছেন। তারা আক্রমণের স্থান পরিদর্শন করেছেন, প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া মানুষজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবং আক্রমণে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের সুত্রানুসন্ধান করেছেন, এমনকি রিমোট সেন্সিং কার্যক্রম চালিয়েছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত ১৯টি শহরে ও গ্রামে ইউক্রেনীয় বাহিনী আবাসিক এলাকায় থেকে যুদ্ধ চালিয়েছে। যদিও যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনে বিবদমান পক্ষগুলোকে বেসামরিক অবস্থান ও স্থাপনা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে।

মাইকোলায়েভ অঞ্চলে গত ১০ জুন রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণে নিহত এক ব্যক্তির মা অ্যামনেস্টির টিমকে জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা তাদের বাড়ির পাশের ভবনে অবস্থান করছিল এবং সেখান থেকে রুশ অবস্থানে গোলাবর্ষণ করছিল। তার ছেলে প্রায়ই সৈন্যদের জন্য বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যেতেন, যদিও তিনি ছেলেকে বারণ করতেন। ১০ জুন বিকেলে ইউক্রেনীয় বাহিনী ওই ভবন থেকে গোলাবর্ষণের কিছুক্ষণের মধ্যে রুশ বাহিনী পাল্টা গোলাবর্ষণ করে। তার ছেলে বাড়ির আঙ্গিনায় দাঁড়ানো অবস্থায় ঘটনাস্থলে নিহত হন।

লিসিচানস্কের অধিবাসী মিকোলা বলেন, আমাদের সৈন্যরা কেন খোলা মাঠে বা ঘন-জঙ্গলে না গিয়ে আবাসিক এলাকায় থেকে যুদ্ধ করছে বুঝতে পারি না। প্রায়ই আশেপাশের কোনো ভবন থেকে গোলাবর্ষণের শব্দ শুনতে পাই। এর পরপর ইনকামিং গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে।

জুলাই মাসের একদিন মাইকোলায়েভে একটি শস্যগুদামে রুশ হামলায় এক ব্যক্তি মারা যান। ঘটনার কয়েক ঘন্টা পর অ্যামনেস্টির গবেষকরা সেখানে গিয়ে শস্যগুদামে ইউক্রেনীয় সৈন্য ও সামরিক যান দেখতে পান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইউক্রেনীয় বাহিনী গুদামটি ব্যবহার করছিল, যদিও সেখানে গুদামের কর্মীরাও কর্মরত ছিল।

খারকিভ ও বাখমুত এলাকার একাধিক স্থানে অ্যামনেস্টির গবেষকরা রুশ হামলার ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধানের সময় তাদের কাছাকাছি কোনো জায়গা থেকেই ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। অন্তত পাঁচটি ক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনী হাসপাতালকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে, এমন প্রমাণ অ্যামনেস্টি পেয়েছে। ২৮ এপ্রিল খারকিভ শহরতলীর একটি ল্যাবরেটরিতে গোলাবর্ষণে দুইজন আহত হয়। ইউক্রেনীয় বাহিনী ওই ভবনটিতে ঘাঁটি করেছিল।

অ্যামনেস্টির গবেষকরা ২৯টি স্কুল পরিদর্শন করেছেন, যার মধ্যে ২২টিতেই ইউক্রেনীয় সৈন্যদের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। কামানের গোলার খোলস, পরিত্যক্ত সামরিক পোশাক, সেনাবাহিনীর দেওয়া খাবারের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা গেছে বহু স্কুলে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.