তাইওয়ান নিয়ে মার্কিন কৌশলগত নীতি অস্পষ্ট!

মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে তুলকালাম হয়ে গেল। তার সফরের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। পুরো তাইওয়ানকে চীন সামরিক মহড়ার মাধ্যমে ঘিরে ফেলেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাইওয়ান নিয়ে মার্কিন নীতি আসলে কী? এ প্রশ্নের জবাব উঠে এসেছে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের একটি বিশ্লেষণে।

চীন ও তাইওয়ানের মানচিত্র

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘এক চীন’ নীতি গ্রহণ করেছে, যা সমস্ত চীনা ভূমিতে বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করে। সুতরাং তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন যা করছে, এর মাধ্যমে একটি কৌশলগতভাবে অস্পষ্ট নীতি অনুসরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর দৃশ্যত বিশ্বের বৃহত্তম কমিউনিস্ট শাসিত চীনকে ক্ষুব্ধ করেছে। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্টবিরোধী চীনা ভিন্নমতাবলম্বীরা তাইওয়ান প্রতিষ্ঠা করে, যা বৃহত্তরভাবে চীনের অস্বীকৃত দ্বীপরাষ্ট্র। ১৯৪০ এর দশকের শেষের দিকে কমিউনিস্টরা চীন দখল করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমর্থন করা শুরু করে।

চীনের তীব্র বিরোধিতার পরও তাইওয়ান সফর করেছেন পেলোসি

তবে ওয়াশিংটন তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাশাপাশি তাইওয়ানের ওপর বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের বিরোধিতাও তারা করেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সাথে তার সংযোগকে ‘একটি শক্তিশালী অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক’ হিসাবে বর্ণনা করেছে।

বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, তাইওয়ানে পেলোসির সফরের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ‘এক চীন’ নীতির লঙ্ঘন করেছে। কারণ এই নীতি সমর্থন করে যে, চীনই এ অঞ্চলে বৃহত্তম জনসংখ্যার একমাত্র প্রতিনিধি। চীন মনে করে, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না, তাদের অনুসৃত এই নীতি পেলোসির সফরের মাধ্যমে লঙ্ঘিত হয়েছে।

তাইপেইতে শীর্ষ মার্কিন কংগ্রেসম্যান পেলোসির অবতরণের আগে এবং পরে চীন কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। পেলোসির এশিয়া সফরের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথেও কথা বলতে হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে যাতে উত্তেজনা কমে।

বেইজিংয়ের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও পেলোসি তার তাইওয়ান সফর সম্পন্ন করেছেন। তিনি সাহস নিয়ে সফরে রওনা হন। এমনকি আমেরিকান মিডিয়াও তার সফর নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে ছিল। মার্কিন মিডিয়ায় রিপোর্ট হয়েছিল, এই উত্তেজনার মধ্যে আসলে কি পেলোসি তাইওয়ান সফর করবেন? ওয়াশিংটনের কৌশলগত নীতি দুদেশকে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে বলেও শঙ্কা ছিল মার্কিন মিডিয়ার।