স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করতে আইন পাস

মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা তৈরির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে একটি বিল পাস হয়েছে। ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল-২০২২’ নামে বিলটি সোমবার (২৯ আগস্ট) সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়।

জাতীয় সংসদ

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন। এর আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই এবং তা বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আইনে বলা হয়েছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্য হিসাবে অন্যায় কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন বা নিরীহ মানুষকে খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধমূলক ঘৃণ্য কার্যকলাপের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছেন অথবা একক বা যৌথ বা দলীয় সিদ্ধান্তক্রমে প্রত্যক্ষভাবে, সক্রিয়ভাবে বা পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, তাদের তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।

এতে আরও বলা হয়েছে, কাউন্সিলে ১২ জন সদস্য থাকবেন। কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। কাউন্সিলের আট সদস্য প্রধান উপদেষ্টা মনোনয়ন দেবেন, যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। উপদেষ্টা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিবও থাকবেন।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নিবন্ধন প্রদান, সাময়িকভাবে স্থগিত ও বাতিল করতে পারবে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধনের খসড়া তৈরি করে। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর এ বিষয়ক সুপারিশও নেওয়া হয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়।

পরের বছর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুটি সংশোধনী দিয়ে ওই খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা গতবছরের জুনে মন্ত্রিপরিষদ সভায় পাঠানো হয়। এরপর এ বছরের জানুয়ারি মাসে খসড়া আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।