কাবুলে আতশবাজি, আলোকিত আকাশ

আফগানিস্তানে আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) সরকারি ছুটি। দিনটিকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেছে তালেবান সরকার। ২০ বছরের নৃশংস যুদ্ধের পর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সৈন্য প্রত্যাহারের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে এদিন। এজন্য রাজধানী কাবুল সেজেছে রঙিন আলোয়। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

মার্কিন সেনা বিদায় নেওয়ার এক বছর পূর্তিতে তালেবানের উল্লাস

বুধবার কাবুলে তিনটি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিজয় উদযাপন সংবলিত ব্যানারগুলো সবার নজর কাড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ব্রিটেন আফগানিস্তানে যুদ্ধে হেরে গিয়েছিল। এদিন সর্বত্র পতপত করে উড়ছিল আফগানিস্তানের কালেমাখচিত নতুন পতাকা।

ইসলাম ধর্মের ঘোষণা সম্বলিত তালেবানের শত শত সাদা পতাকা ও বাতি সরকারি ভবন থেকে ওড়ানো হচ্ছিল। তালেবান যোদ্ধাদের আতশবাজি এবং উদযাপনের মুহুর্মুহু বন্দুকের গুলিবর্ষণে কাবুলের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। মার্কিন দূতাবাসের কাছে মাসুদ স্কোয়ারে তালেবানের পতাকা বহনকারী সশস্ত্র যোদ্ধারা স্লোগান দিচ্ছিল ‘আমেরিকার মৃত্যু হোক’। হর্ন বাজিয়ে শহর জুড়ে গাড়ি চালিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে তালেবান সেনারা।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখল করতে সমর্থ হয়। ৩১ আগস্ট আমেরিকান সেনারা কাবুল ছেড়ে চলে যায়। তালেবান সরকার এখনও পর্যন্ত কোনো দেশের স্বীকৃতি পায়নি। পশ্চিমাদের অভিযোগ, নতুন তালেবান এখনও দেশটিতে কঠোর আইন বজায় রেখেছে, বিশেষ করে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে চরম কঠোরতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

বিধিনিষেধ এবং গভীরতর মানবিক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও আফগান নাগরিকরা খুশি। তাদের অনেকেই মনে করেন, তারা আনন্দিত যে, বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে তালেবান বিদ্রোহ করেছিল এবং দেশকে স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছে। কাবুলের বাসিন্দা জালমাই বলেন, কাফেরদের হাত থেকে আল্লাহ আমাদের দেশকে মুক্তি দিয়েছেন এবং ইসলামিক আমিরাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

৩১ আগস্ট মধ্যরাতে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়। আর এর মাধ্যমে আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান ঘটে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসন শুরু হয়। ২০ বছরে সংঘাতে নিহত হয় প্রায় ৬৬ হাজার আফগান সৈন্য এবং ৪৮ হাজার বেসামরিক লোক।

এই সংঘাতে নিহত হয়েছিল ২ হাজার ৪৬১ মার্কিন সেনা, যা আমেরিকান জনসাধারণের পক্ষে সহ্য করা কঠিন ছিল। তাছাড়া অন্যান্য ন্যাটো দেশের ৩ হাজার ৫০০শরও বেশি সেনাকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনী গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, আফগানিস্তানে যুদ্ধ মার্কিন জনগণের কাছে বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।