গুলি করে চীনা ড্রোন ভূপাতিত করল তাইওয়ান

প্রথমবারের মতো চীনের একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে তাইওয়ানের সেনাবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাইওয়ানের কিনমেন দ্বীপের আকাশে উড্ডয়নরত ড্রোনটিকে সংরক্ষিত এলাকা থেকে সরে যেতে একাধিকবার সতর্ক করার পরও সেটি অবস্থান পরিবর্তন না করায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

তাইওয়ানের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে চীনের যুদ্ধজাহাজ

চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের অদূরে অবস্থিত তাইওয়ানের কিময় দ্বীপপুঞ্জ, যার অপর নাম কিনমেন। সেখানকারই ক্ষুদ্র দ্বীপ শিউ। আজ দুপুরে শিউ দ্বীপে মোতায়েন তাইওয়ানি সৈন্যরা আকাশে একটি অজ্ঞাতপরিচয় ড্রোনকে উড়তে দেখে বেশ কয়েকবার ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে সরে যাবার নির্দেশ দেয়। সতর্কবার্তা না শোনায় একপর্যায়ে গুলি চালিয়ে ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূপতিত ড্রোনটি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের পরিচালিত। এর আগে বুধবার কিনমেন দ্বীপপুঞ্জের তিনটি পৃথক এলাকায় উড়তে থাকা চীনের তিনটি ড্রোনকে লক্ষ্য করে সতর্কতাসূচক গুলি ছোঁড়া হয়।

তাইওয়ানি বাহিনীর কিনমেন ডিফেন্স কমান্ডের মুখপাত্র মেয়র জেনারেল চ্যাং জুং-শুন বলেছেন, কিনমেন থেকে আড়াই মাইল দূরে অবস্থিত মূল চীনা ভূখণ্ডের জিয়ামেন শহর থেকে ড্রোনটি ওড়ানো হয়। তাইওয়ানি সৈন্যরা ড্রোনটি শনাক্ত করার পর যথাযথ বিধি অনুযায়ী কয়েকবার সতর্ক করে। এরপরও সেটি স্থান ত্যাগ না করায় একপর্যায়ে গুলি চালানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার জিয়ামেন থেকে পাঠানো আরেকটি ড্রোন এরদান দ্বীপের কাছে উড়তে থাকলে তাইওয়ানি সৈন্যরা সেটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। তবে ড্রোনটি তার আগেই নিরাপদ স্থানে সরে যেতে সমর্থ হয়।

চলতি মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরকে কেন্দ্র করে তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক ও নজরদারি তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন। পেলোসির সফরের পর থেকে এ পর্যন্ত তাইওয়ানের আশেপাশে তিনটি সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। প্রতিদিন চীনের যুদ্ধজাহাজ ও জঙ্গিবিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করছে বলে অভিযোগ করেছেন তাইওয়ানের কর্মকর্তারা।

গতকাল বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তাইওয়ানের সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লিন ওয়েন-হুয়াং বলেছেন, তাইওয়ানের কাছে চীনের উচ্চ মাত্রার সামরিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। নিয়মিত সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যকার প্রণালীকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় রূপান্তরের যে মতলব বেইজিং বয়ে বেড়াচ্ছে, সেটাই তাইওয়ান প্রণালীতে অস্থিতিশীলতার বড় কারণ হবে।

তিনি বলেন, যেসব যুদ্ধজাহাজ ও জঙ্গিবিমান আমাদের ১২ নটিক্যাল মাইল জলসীমা ও আকাশসীমার ভেতরে প্রবেশ করছে, তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী সেগুলোর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা ও পাল্টা আক্রমণের অধিকার প্রয়োগ করবে।