অকটেন-পেট্রোলের চাহিদার পুরোটাই উৎপাদন হবে দেশে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে দেখা দিয়েছে জ্বালানি তেলের সংকট। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশেও। তাই সম্প্রতি দেশে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এই পরিস্থিতিতে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদার পুরোটাই দেশে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।

জ্বালানি তেল, ফাইল ছবি

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে অকটেন-পেট্রোল উৎপাদনের জন্য চার প্রতিষ্ঠানকে গ্যাসক্ষেত্রের তলানি বা কনডেনসেট আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তবে এই কনডেনসেটে উৎপাদিত অকটেন-পেট্রোলের দাম চার মাসেও ঠিক হয়নি। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই চিন্তিত।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, অকটেন-পেট্রোলের চাহিদার পুরোটা দেশে উৎপাদন হলে এ খাতে বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা বাঁচবে। তাদের মত, বিশ্ববাজারে মন্দার এই সময়ে আমদানি কমিয়ে পণ্য দেশে উৎপাদন করা গেলে তা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।

দেশে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদা বছরে ৯ লাখ টন। এর মধ্যে প্রায় চার লাখ টন দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে পাওয়া কনডেনসেট থেকে উৎপাদন করা হয়। আমদানি করা হয় বাকি ৫ টন। এই ৫ টন আমদানিতেই বছরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, বিপিসির ব্যয় হয় বড় অংকের ডলার।

এ বিষয়ে পারটেক্স পেট্রোল ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুবেল আজিজ বলেন, শুল্ক-করসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ার কারণে অকটেন-পেট্রোল বিক্রি করা যাচ্ছে না। দেশে অকটেন-পেট্রোলের চাহিদা পুরোটাই চারটি কোম্পানির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে জ্বালানি সংকট নিরসনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে, তাতে দেশের অর্থনীতি হবে শক্তিশালী।

বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সরকার বর্তমানে গুরুত্ব দিচ্ছে কীভাবে জ্বালানি সাশ্রয় করা যায় তার ওপর। পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অকটেন-পেট্রোল নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ মাধ্যমে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রার।

সরকার যদি বেসরকারি খাতের অকটেন-পেট্রোল ক্রয় করে, তাহলে দেশে স্থানীয়ভাবে তেল উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে।

বেসরকারি উদ্যোক্তারা বিভিন্ন সময়ে কিছু দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন, যা নিয়ে কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেন বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ। খুব শিগগিরই তারা এর সমাধান করতে পারবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি সংকট দিন দিন বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে কনডেনসেট থেকে পেট্রোল-অকটেন উৎপাদন করতে উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাদেরই একজন ম তামিম।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে পরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে, আবার কমছে। ফলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে দাম। এ অবস্থায় স্থানীয়ভাবে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্য উৎপাদন করতে পারলে তাতে লাভবান হবে দেশ ও জনগণ।