আপনি পড়ছেন

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত তাজউদ্দীন আহমদ। তার ছেলে বাংলাদেশের তরুণ রাজনীতিবিদ সোহেল তাজ। জনপ্রিয় এই ব্যক্তিত্ব তার বাবার স্মৃতিচারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হৃদয়গ্রাহী স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছেলে তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।

sohel taj with family

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে স্মৃতিচারণ পোস্টটি করেন তিনি। লেখনির মাধ্যমে সোহেল তাজের শৈশব ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ ফুটিয়ে তোলা হয়। শুক্রবার রিপোর্টটি লেখার সময় পোস্টটিতে লাইক হয়েছে প্রায় ২২ হাজার। আর শেয়ার হয়েছে প্রায় ৩ হাজার। এক হাজার মানুষ তাদের অনুভূতি জানিয়েছেন কমেন্টস-এর মাধ্যমে।

নিজের শৈশব তুলে ধরে সোহেল তাজ লেখেন, 'আজ থেকে ঠিক ৪১ বছর আগে এই দিনে একটি পাঁচ বছর বয়েসের ছোট্ট ছেলে হারাল তার প্রিয় বাবাকে। যার হাত ধরে সে যেত বাড়ির পাশে আবাহনির মাঠে। যার হাত ধরে ধানমণ্ডির সাতমাসজিদ রোডের রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে খুঁজে পেয়েছিল তার প্রথম স্কুল। টেলিভিশনের পর্দায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আর জাতীয় পতাকা পরিবেশিত হলে যিনি সব সময় মনে করিয়ে দিতেন দাড়িয়ে স্যালুট করে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে। যিনি কোমল ভাবে বোঝাবার চেষ্টা করতেন মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষের আত্মত্যাগের কথা। যিনি এই ছোট্ট ছেলেটিকে একটি আত্মবিশ্বাসী দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করার গুরুত্ব শেখাবার চেষ্টা করেছিলেন এবং অনুপ্রেরণা যোগানোর চেষ্টা করেছিলেন নানা কায়দায়।'

বাবার লাশের স্মতিচারণ করেন এভাবে, 'ছেলিটির জীবনটা হঠাৎ করে পাল্টে গেলো একদিন। ছেলেটি দেখতে পেল একটি লাশ, তার বাবার লাশ। লাশটি রাখা হল একটি রুমে আর শেই লাশ দেকতে আসলো হাজার হাজার মানুষ। সেও অবাক হয়ে দেখতে লাগল সবার সাথে। পরে সেও গেল বনানি কবরস্তানে। সেখানে সবাই তাকে প্রথমে মাটি দিতে বল্য- সেও দিল। তার কাছে মনে হচ্ছে এটা যেন একটি স্বপ্ন এবং এই স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে সে ভেসে যাচ্ছে।'

বাবার মৃত্যুর কারণ খুঁজতে গিয়ে সোহেল তাজ লেখেন, 'আস্তে আস্তে সময় পার হতে লাগলো আর সেই স্বপ্নের আবরণ ধিরে ধিরে কেটে যেতে লাগলো। তারপর থেকে তার মনে খালি প্রশ্ন আর প্রশ্ন। তার কেন বাবা নেই? অন্য সবার তো বাবা আছে। আরও সময় পার হল কিন্তু প্রশ্নগুলো আরও জটিল হতে লাগলো। কেন মেরে ফেলা হোল তার প্রিয় বাবাকে? উনি কি অন্যায় করেছিলেন? ওনাকে জেলে কেন রাখা হয়েছিল? আর জেলখানায় মেরে ফেললো কারা এবং কেন? এই প্রশ্ন গুলো যখন তার মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছে তখন সে তার মাকে বলতে শুনত, আমি আমার স্বামী হারিয়েছি আর আমার সন্তানরা তাদের বাবাকে হারিয়েছে, কিন্তু দেশ কি হারাল? আমাদের ক্ষতির চাইতে দেশের আরো মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেল।'

সোহেল তাজ লেখেন, 'তারপর ৪১ বছর পার হয়ে গেল। ছোটবেলার সেই ধুক্ষ, কষ্ট আর যন্ত্রণা নিয়েই বছরগুলো পার করল। সে বুজতে পারল যে তার সত্ত্বা তার সেই হারানো বাবার মাঝেই লুকিয়ে আছে। আজ ৩রা নভেম্বর ২০১৬। আজ থেকে ৪১ বছর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিলে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী জাতীয় চার নেতা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সারকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এম মুনসুর আলি, খাদ্য ও ত্রানমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান।'

সবশেষ সোহেল তাজ লিখেন, 'বাংলাদেশ তার সত্ত্বা খুঁজে পাবে তখনই যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সহ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন (অব.) এম মুনসুর আলি, এ এইচ এম কামরুজ্জামান দের মত সকল নেতাদের আত্মত্যাগ, অবদান আমরা সঠিক এবং পৃথকভাবে মূল্যায়ন করতে পারব। তাদের আত্মত্যাগ ও আত্মদান খুলে দিক ইতিহাসের সেই জানালা যার গভীরে ঢুঁকে এই জাতি খুঁজে পাবে তার সত্ত্বা।'

গতকাল ৩ রা নভেম্বর ছিল জেল হত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সোহেল তাজের বাবা তাজউদ্দীন আহমদসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। তখন সোহেল তাজের বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর।

আপনি আরো পড়তে পারেন

নাসিরনগরে এবার আগুনে পুড়লো হিন্দুদের বাড়ি

সাগরে নিম্নচাপ, রাজধানীতে সকাল থেকে বৃষ্টি

বাংলাদেশ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ মহড়া শুরু শনিবার

প্রাণিসম্পদমন্ত্রী: নাসিরনগরের হামলার ঘটনায় হেফাজত জড়িত নয়

বাজারে সস্তায় নতুন ইলিশ

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.