স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে নিজের মামলায় ফেঁসে গেলেন বাবুল

চট্টগ্রামে স্ত্রী খুনের মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলা করেছিলেন, তাতে তাকেই প্রধান আসামি করে অভিযোগপত্র দিল পিবিআই।

বাবুল আক্তার

সংস্থাটির চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের সুপার নাঈমা সুলতানার নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ওমর ফারুকসহ একটি দল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আদালতে গিয়ে এ অভিযোগপত্র জমা দেয়।

নাঈমা সুলতানা বলেন, মোট সাতজনকে এ মামলার অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে বাবুল আক্তারকে আসামি হিসেবে পাওয়া গেছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর তদন্ত করে ১ নম্বর আসামি বাবুল আক্তার কীভাবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বাকি আসামিদের বিষয়ে নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘তদন্ত করে যাকে আসামি হিসেবে পেয়েছি, তাদেরই অভিযুক্ত করেছি। বিচার প্রক্রিয়ায় গেলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।’ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার এডিসি কামরুল হাসান বলেন, অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালত এটা দেখবেন। আগামী ১০ অক্টোবর এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

এ মামলার কার্যক্রম চলছে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেসার আদালতে। হেফাজতে নির্যাতন ও কারাগারে কক্ষ তল্লাশির অভিযোগে দুটি অভিযোগ করেছিলেন বাবুল আক্তার। দুটি আবেদনের বিষয়ে ১৯ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য আছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন বাবুল আক্তার।

মিতু হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে ২০২১ সালের ১২ মে তার করা মামলাতেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর সেদিনই বাবুলসহ ৯ জনকে আসামি করে নতুন হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। আইনি জটিলতার কারণে এ বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৬ মার্চ সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে বাবুলের করা মামলার তদন্ত শেষ করতে বলে আদালত।

এর আগে স্ত্রী খুনের মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার আদালতে আবেদন করেছেন।

গত শনিবার ফেনী মডেল থানার ওসি ফেনী কারাগারে গিয়ে বাবুলের সেলে তল্লাশি চালান, যা কারাবিধিতে নেই। এখন বাবুল ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কারাগারে বাবুলের নিরাপত্তা জোরদার করতে ফেনীর জেল সুপারকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আবেদনে বলা হয়েছে।