গরিবদের চিকিৎসা দিতে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ

দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চালু হলো দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। আজ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় চিকিৎসকদেরকে দেশের সাধারণ ও গরিব রোগীদের চিকিৎসায় আত্মনিয়োগ করার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চিকিৎসকদের মানবিক দৃষ্টি দিতে হবে। দেশের গরিব সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে হবে। গ্রামে যেতে হবে, গ্রামের মানুষের দিকে তাকাতে হবে। সবাইকে রাজধানীতে থাকলে চলবে না।

তিনি বলেন, রোগীদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই রোগীরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে। চিকিৎসকের ভালো আচরণে অর্ধেকটাই সুস্থ হয়ে যায় একজন রোগী। এ সময় চিকিৎসকদের গবেষণায়ও নজর দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধনকালে বিএসএমএমইউ প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিএসএমএমইউ উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৭৫০ শয্যার ১৩ তলাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে দ্বিতল বেজমেন্ট রয়েছে। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে রয়েছে ১৪টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার এবং ১০০ শয্যার আইসিইউ। জরুরি বিভাগে রয়েছে ১০০ শয্যা, ছয়টি ভিভিআইপি কেবিন, ২২টি ভিআইপি কেবিন এবং ডিল্যাক্স শয্যা। এছাড়া সেন্টারভিত্তিক প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছে আটটি করে শয্যা। হাসপাতালে এক্স-রে, সিটি-স্ক্যান, এমআরআইসহ অত্যাধুনিক সব ডায়াগনস্টিক সুবিধাতো রয়েছেই।

হাসপাতালটিতে প্রথম পর্যায়ে থাকবে এক্সিডেন্টাল ইমার্জেন্সি, ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল কেয়ার সেন্টার, ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, অটিজম সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি সেন্টার, কিডনি সেন্টার, কার্ডিও ও সেরিব্রো ভাসকুলার সেন্টার।

হাসপাতালের দ্বিতীয় পর্যায়ে জেনারেল সার্জারি সেন্টার, রেসপিরেটরি মেডিসিন সেন্টার, অপথালমোলজি, ডার্মাটোলজি সেন্টার, ডেন্টিস্ট্রি এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন বা রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থাকবে। এছাড়া বিশ্বমানের চিকিৎসা বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, জিন থেরাপি ও রোবোটিক অপারেশনের ব্যবস্থাও থাকবে।

সুপার স্পেশালাইজড এই হাসপাতালে বিশেষজ্ঞসহ ৩০০ চিকিৎসক ও ১ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করবেন। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি এই হাসপাতালে দুই বছরের জন্য কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করবেন ৫৬ জন কোরিয়ান চিকিৎসাবিশেষজ্ঞ।

দেশের জনগণের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয় দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পটি। ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কোরিয়া সরকার। বাংলাদেশ সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩৩০ কোটি টাকা। বাকি ১৭০ কোটি টাকা নিজস্ব ফান্ড থেকে দিয়েছে বিএসএমএমইউ।