মহানগর ও জেলা সদরে ইভিএমে ভোট, রোডম্যাপে আরও যা আছে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা রাখার কথা বলা হয়েছে। আর ইভিএম ব্যবহার করা হবে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে। এক্ষেত্রে কেবল মহানগর এবং জেলা সদরের আসনগুলাতে ভোট হবে ইভিএমে।

নির্বাচন কমিশন

রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর তফসিল ঘোষণা করা হবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইসির এই রোডম্যাপ সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।

নির্বাচনের পথে ইসির সামনে ১৪টি চ্যালেঞ্জ এবং সেগুলো থেকে উত্তরণের ১৯টি উপায় নিয়েও বলা হয়েছে রোডম্যাপে। এছাড়া ভোটের আগের কাজের সূচিও প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া আইনগত সংস্কার কাজ; যা চলবে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। চলতি বছরের মার্চ থেকে শুরু হওয়া অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শেষ হবে এ বছরের ডিসেম্বরে। সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস হবে ২০২৩ সালে জানুয়ারি থেকে ২০২৩ এর জুন পর্যন্ত।

চলতি বছরের আগস্টে শুরু হওয়া প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা তৈরির কাজ শেষ করবে ২০২৩ সালের আগস্টে। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্য়ন্ত চলবে নতুন দল নিবন্ধনের কাজ। চলতি বছরের মে মাস থেকে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ। ২০২৩ সালের মার্চে এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ এবং তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সংসদীয় আসন অনুযায়ী ৩০০ আসনের তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ হবে ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৩ এর অগাস্টের মধ্যে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ করা হবে। ২০২৩ জানুয়ারি থেকে তফসিল ঘোষণার পরেও চলবে প্রশিক্ষণ। পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চলবে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ইসি গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেন। এর পরপরই তারা রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞ, ইভিএমের কারিগরি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদদের নিয়ে সংলাপ শুরু করেন। সংলাপে পাওয়া মতামত পর্যালোচনা করে আইন সংস্কার, ইভিএমে ভোটগ্রহণের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

রোডম্যাপ উপস্থাপন করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক বিভেদ আর প্রশ্নের মোকাবেলা করতে হয়েছে। তারপরও গত ছয় মাসে কিছুটা হলেও আস্থা অর্জনের দিকে এগিয়েছে ইসি।

এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর সাড়ে ১৫ মাস। এই সময়ের মধ্যে সব দলের আস্থা অর্জন করে ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যাশা ইসির। এই কর্মপরিকল্পনার উদ্দেশ্য একটাই- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এমিলি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাব। সবার সহযোগিতা পেলে অংশগ্রহণমূলক ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হব। ‘বাস্তবভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক’ এ রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে ইসির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছোনো যাবে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, সেজন্য অংশীজনের সহযোগিতাও প্রয়োজন।

২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির। বিষয়টি তুলে ধরে নির্বাচন কশিমনার মো. আলমগীর বলেন, এ কর্মপরিকল্পনায় সবার মতামত রাখার চেষ্টা করেছি। যেসব বিষয় আওতায় রয়েছে তা রাখা হয়েছে। তবে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সুপারিশগুলো রাখা হয়নি।