ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ ড্যামে হামলা, লোকালয়ে ঢুকছে নদীর পানি

ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ বাহিনীর কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করা শহর ও গ্রামগুলো ধ্বংস করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ড্যামে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনারা। এতে নদীর বাঁধ ভেঙে তীর উপচে পানি ঢুকছে। সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে স্থানীয় লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।

রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ড্যাম

মধ্য ইউক্রেনের বৃহত্তম শহর ক্রিভি রিহে যুদ্ধের আগে সাড়ে ছয় লাখ লোক বসবাস করতো। ওই এলাকার একটি ড্যামে গতকাল বুধবার আটটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী।

ইউক্রেনের একজন পার্লামেন্ট সদস্য টুইটারে লিখেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কারাচুনভ ড্যামটি ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন নদীর বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। ওই এলাকার আবাসিক ভবনগুলোর অবস্থান নদী থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে।

ভলোদিমির জেলেনস্কি

আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, পানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে কোনো সামরিক যোগসূত্র নেই। হাজার হাজার মানুষ এই ড্যামের পানির ওপর নির্ভর করত। রুশ বাহিনীর হামলায় ওই এলাকায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

ক্রিভি রিহে শহরের প্রধান আলেক্সান্ডার ভিলকুল সতর্ক করে বলেছেন, এরই মধ্যে দুটি জেলার ২২টি রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শহরের কর্মকর্তারা বলেছেন, ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন সেখানে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ কিউবিক মিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে এবং ইনহুলেটস নদীতে পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে।

ইউক্রেন বলছে, সম্প্রতি পাল্টা আক্রমণের শিকার হয়ে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ায় এই হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলার পর জেলেনস্কি রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ আখ্যা দিয়ে বলেন, যেসব বখাটে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়, তারাই দূরে কোথাও থেকে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। তারা কেবল দুর্বল বেসামরিক লোকদের সাথে লড়াই করে। এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে মস্কো প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।

গত সপ্তাহে বিদ্যুৎকেন্দ্রে রুশ হামলার কারণে পুরো ইউক্রেন ব্ল্যাক আউটের শিকার হয়।

সম্প্রতি ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা খারকিভে পাল্টা আক্রমণের মুখে পিছিয়ে যায় রুশ বাহিনী। ইউক্রেন দাবি করছে, তারা ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা পুনরুদ্ধার করেছে। বুধবার জেলেনস্কি পুনরুদ্ধার করা শহর ইজিয়াম পরিদর্শন করেন। তিনি পাল্টা আক্রমণে অংশ নেওয়া সেনাদের ধন্যবাদ জানান এবং প্রতিশ্রুতি দেন যে ইউক্রেনের পতাকা দেশের প্রতিটি শহর ও গ্রামে ফিরে আসবে।

এদিকে রাশিয়া স্বীকার করেছে, তাদের বাহিনী খারকিভ অঞ্চলের কিছু শহর ছেড়ে গেছে। তবে তারা এটিকে পশ্চাদপসরণ বলতে রাজি নয়। তারা বলছে, পুনরায় সংগঠিত হওয়ার জন্য তারা কৌশল অবলম্বন করছে।