দেশে জাল টাকার ১৫ মার্কেটিং কোম্পানি সক্রিয়!

জাল নোট তৈরি ও বিক্রি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও গাজীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, দেশে ১৫টি জাল টাকার মার্কেটিং কোম্পানি সক্রিয় রয়েছে। ঈদ ও পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারে জাল নোট ছাড়ে এই চক্র।

দেশে জাল টাকার ১৫ মার্কেটিং কোম্পানি সক্রিয়!

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মজিবুর রহমান, শাকিল রহমান ওরফে আ. রহমান, রাসেল উদ্দীন ওরফে রাসেল সরদার। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক কোটি ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট জব্দ করা হয়।

এছাড়া একটি ল্যাপটপ, একটি কালার প্রিন্টার, দুটি নাট, দুটি কবজা সংযুক্ত পারটেক্স বোর্ড, ৫টি ডাইস বোর্ড, বিভিন্ন রঙয়ের ৬টি ছোট কৌটা ও কিছু নিরাপত্তা সুতা জব্দ করা হয়।

ডিবি জানায়, জাল নোট কারবারী চক্র ঈদ ও পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারে জাল নোট ছড়িয়ে আসছিল। তারা প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ লাখ টাকার জাল নোট তৈরি করে বাজারে ছাড়তো। জব্দ জাল নোট আসন্ন পূজাকে কেন্দ্র করে মার্কেটগুলোতে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল এ চক্রের।

ডিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ৬ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট হস্তান্তরের সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গাজীপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের আরেক সহযোগীকে। তারা গাজীপুর এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকা তৈরির কারখানা পরিচালনা করছে। পরে ওই কারখানা থেকে ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার জাল নোটসহ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারদের নামে জাল টাকা তৈরির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা গত ১২ বছর ধরে জাল টাকা তৈরি এবং বিক্রির কারবার করে আসছিল। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার মজিবুর রহমান জানান, দেশে ১৫টি জাল টাকার মার্কেটিং কোম্পানি রয়েছে। তারা এক লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোটের বান্ডেল মান ভেদে ১০-১৫ হাজার অরিজিনাল টাকায় কিনে নেয়। মাসে তারা ৫০ লাখ থেকে এক কোটি টাকার জাল নোট তৈরি করে আসছিল।

ডিবি প্রধান বলেন, ঈদ ও পূজায় কেনাকাটার সময় তারা এ জাল নোট বাজারে ছেড়ে দেয়। তাদের মার্কেটিংয়ের লোক আছে। চক্রটি ১০ হাজার অরিজিনাল টাকায় এক লাখ টাকার সম-পরিমাণের জাল নোট মার্কেটিংয়ের লোকজনের কাছে বিক্রি করে। পরে মার্কেটিংয়ের লোকজন বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে এই জাল নোট বাজারে ছাড়ে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগেও জাল টাকা তৈরির চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে জেলে গিয়েও তারা বাইরে থাকা চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবসা সচল রাখে। এছাড়া জেল থেকে বের হয়ে আবার এই কারবার শুরু করে।