বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে রানীর শেষকৃত্যে যাচ্ছেন না সৌদি যুবরাজ

মৃত্যুর পাঁচ বছর পরও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য বিব্রতকর একটি অধ্যায় হয়ে রয়েছেন ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক কলামিস্ট সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। মূলত তার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে অংশ নিতে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন না সৌদি যুবরাজ। খবর রয়টার্স।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন না সৌদি যুবরাজ

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সোমবার রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না।

এর আগে যুক্তরাজ্য আশা করেছিল সৌদি যুবরাজ ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। তবে গতকাল রোববার জানা যায়, সৌদির আরেক প্রিন্স তুর্কি বিন ফয়সাল এখন রানীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

রানীর সাথে সাক্ষাতে সৌদি যুবরাজ, ফাইল ছবি

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর মিডল ইস্ট আই এবং ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক কলামিস্ট সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি নৃশংসভাবে নিহত হন। প্রথমে পুরো বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলে। তবে তুরস্কের অনড় মনোভাবের কারণে এক সময় হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের হয়।

সৌদি রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক খাশোগিকে হত্যার পর মরদেহ টুকরো টুকরো করে এসিডে গলিয়ে ফেলা হয়। ফলে তার আর কোনো চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে পুরো বিশ্বে সমালোচনার মুখে পড়েন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

যুক্তরাজ্য এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি যুবরাজের শীর্ষ সহযোগী সৌদ আল-কাহতানিসহ ১৯ জন সহযোগীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। অন্যদিকে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে খাশোগি হত্যার জন্য যুবরাজকেও দায়ী করা হয়। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ এতে যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে।

আজ সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠেয় রানীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধানসহ নানা পর্যায়ের নেতাদের বৃহত্তম সমাবেশ হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকজন নেতাও অংশ নেবেন। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে যুবরাজ মোহাম্মদের অংশ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে যুবরাজের স্থানে অন্য কাউকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব।

গত শুক্রবার খাশোগির বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিজ বলেন, সৌদি যুবরাজকে এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেওয়া উচিত নয়। তার উপস্থিতির মাধ্যমে রানীর স্মৃতিতে দাগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। শোকের সময়টিকে অন্যায়ের বৈধতা ও স্বাভাবিকীকরণের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।