টুর্নামেন্টের ট্রফি আছড়ে ভাঙলেন ইউএনও

ফুটবল খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সবার সামনে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের ট্রফি আছড়ে ভেঙে ফেলেছেন বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহরুবা ইসলাম। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় ইউএনওকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

টুর্নামেন্টের ট্রফি আছড়ে ভাঙলেন ইউএনও

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চৈক্ষ্যং আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ট্রফি ভাঙার ঘটনায় ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এদিকে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি।

স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করে আবাসিক যুব স্বাধীন সমাজ ক্লাব। শুক্রবার ছিল ফাইনাল খেলা। এ খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও মেহরুবা ইসলাম।

খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণের আগে ইউএনও বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনারা যত দিন পর্যন্ত সহনশীল না হতে পারবেন, তত দিন ট্রফিগুলো আমানত হিসেবে আমার কাছে থাকবে। আরেকটি ম্যাচ হলে তারপর দেবো।’

ইউএনওর এমন বক্তব্যের জবাবে উপস্থিত সবাই ‘না না’ বলতে থাকেন। এরপর ‘যদি ট্রফি না থাকত, আমরা খেলতাম না? আমি ট্রফিটা ভেঙে এখন খেলা শুরু করব’ বলেই ট্রফি দুটি আছড়ে ভেঙে ফেলেন ইউএনও।

টুর্নামেন্টের আয়োজক আবাসিক যুব স্বাধীন সমাজ ক্লাবের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ফাইনাল খেলায় আবাসিক জুনিয়র একাদশ ও রেফারফাড়ি বাজার একাদশের খেলা ড্র হয়েছিল। পরে টাইব্রেকারে আবাসিক জুনিয়র একাদশ বিজয়ী হয়। তবে রেফারফাড়ি বাজার একাদশ এতে আপত্তি জানায়। পরে রেফারি, খেলোয়াড়সহ সবাই মিলে বিষয়টির মীমাংসা করেন। আর কোনো সমস্যা ছিল না। তবে ট্রফি বিতরণের সময় প্রধান অতিথি এভাবে ট্রফি ভেঙে ফেলবেন, সেটি কেউ কল্পনাও করেননি।

চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন বলেন, এ খেলায় বিজয়ী দল ঘোষণার সময় দু’পক্ষের মধ্যে বিতর্ক হয়েছিল। ইউএনও মনে করেছিলেন, ট্রফি বিতরণ করলে দুই পক্ষের মধ্যে অসন্তোষ থেকে যাবে। এ জন্য হয়ত বিতরণ না করে ভেঙে ফেলেছেন।

এ ঘটনার পর আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘ইউএনও মেহরুবা ইসলাম আলীকদমের জনগণকে অসম্মান করেছেন। তাকে আলীকদম থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে মেহরুবা ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ রকম আচরণ করার কথা নয়। বিতর্ক থাকলে ট্রফি না ভেঙে নিজের হেফাজতে রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারতেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।