গণভোট: দোনেৎস্ক-লুহানস্কের প্রায় শতভাগ রায় রাশিয়ার পক্ষে!

রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে পাঁচ দিনব্যাপী গণভোট শেষ হয়েছে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর)। স্থানীয় নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে মস্কো জানিয়েছে, দোনেৎস্ক-লুহানস্কের প্রায় শতভাগ রায় রাশিয়ার পক্ষে। খবর টিআরটি।

পাঁচ দিন ধরে চলেছে গণভোট কার্যক্রম

স্থানীয় নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রাথমিক পরিসংখ্যান অনুসারে দোনেৎস্কে ৯৯.২৩ শতাংশ ভোট রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির পক্ষে ছিল। যেখানে লুহানস্কে পক্ষে পড়েছে ৯৮.৪২ শতাংশেরও বেশি ভোট। অন্য দুটি অঞ্চলের প্রাথমিক ফলও রাশিয়ার পক্ষেই গেছে বলে জানা গেছে। জাপোরিঝিয়ায় মস্কোপন্থী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৯৩.১১ শতাংশ ভোটার রাশিয়ায় যোগদানকে সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে খেরসনে চূড়ান্ত ফলে দেখা গেছে ৮৭.০৫ শতাংশেরও বেশি ভোটার এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

আজ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমায় গণভোটের ফল প্রকাশ করা হতে পারে। আগামী শুক্রবার রুশ পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সেদিনই ভোট হওয়া অঞ্চলগুলোকে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করার ঘোষণা দিতে পারেন পুতিন।

গণভোট হওয়া চার অঞ্চল

সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গত মাসে রাশিয়া কিছু কিছু এলাকা থেকে পিছু হটতে থাকে। এরই এক পর্যয়ে খেরসন, জাপোরিঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে গণভোটের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। গত শুক্রবার থেকে এসব অঞ্চলে পাঁচ দিনব্যাপী গণভোট শুরু হয়।

আগে থেকে রাশিয়া ঘোষণা দিচ্ছিল, গণভোটের রায় পক্ষে গেলে অঞ্চলগুলো রাশিয়ার সাথে যুক্ত করা হতে পারে। তবে পশ্চিমা বিশ্ব দাবি করছে, ফল আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল ক্রেমলিন। ফলে রায় রাশিয়ার পক্ষেই যাবে, তাতে সন্দেহের কিছু নেই।

২০১৪ সালেও এমন গণভোটের মাধ্যমে ক্রিমিয়া অঞ্চলকে রাশিয়ার সাথে যুক্ত করা হয়েছিল। তখন প্রথমে অভিযান চালিয়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। পরে গণভোটের মাধ্যমে ক্রিমিয়াকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। সে সময়ও পশ্চিমা বিশ্ব এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল। আট বছর পরে এসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

তবে এবার আরও শক্ত অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া। কয়েকদিন ধরেই রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘোষণা দিচ্ছেন, রাশিয়ার যে কোনো অঞ্চল রক্ষার দায়িত্ব ক্রেমলিনের। নতুন অধিভুক্ত অঞ্চলের ক্ষেত্রেও তাদের একই মনোভাব। এমনকি রাশিয়া নিজেদের রক্ষার্থে পরমাণু অস্ত্রও ব্যবহার করতে পারে। রাশিয়া এসব পদক্ষেপকে নিজেদের মানুষজনকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করছে।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ গণভোটকে প্রহসন আখ্যা দিয়ে বলেছেন, কিয়েভই মস্কো-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে তার নাগরিকদের রক্ষা করবে। বিষয়টি নিয়ে পুতিনের সাথে কোনো রকম আলোচনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলার কিছু নেই।