নোবেল শান্তি পুরস্কার: প্রতিদ্বন্দ্বীর তালিকায় অল্টনিউজের দুই প্রতিষ্ঠাতা

চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের ফ্যাক্টচেকিং সাইট অল্টনিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়ের ও প্রতীক সিনহা। এছাড়া পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, পোপ ফ্রান্সিস, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নামও মনোনীতের তালিকায় রয়েছে। টাইম ম্যাগাজিন এ কথা জানিয়েছে।

অল্টনিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়ের ও প্রতীক সিনহা

মহানবীকে (স.) নিয়ে বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মার কুরুচিকর মন্তব্যের বিষয়ে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা মোহাম্মদ জুবায়ের ও তার বন্ধু প্রতীক সিনহা দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে মিথ্যা সংবাদ, প্রচারণা এবং বিশেষ করে মুসলিম ও সংখ্যালঘু বিদ্বেষী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছেন। ভারত সংক্রান্ত খবর, ছবি ও ভিডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাইয়ে সারাবিশ্বের অনেকে নির্ভর করেন অল্টনিউজের ওপর।

বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারত হয়ে উঠেছে ভুয়া ও উসকানিমূলক সংবাদের অন্যতম বড় উৎস। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিতি ধনকুবের মুকেশ আম্বানি, গৌতম আদানি ও বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভা সদস্য সুভাষ চন্দ্রের মালিকানায় রয়েছে ভারতের মূলধারার ৭০ ভাগের বেশি সংবাদমাধ্যম। মিথ্যা প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে ওঠা মূলধারার টিভি চ্যানেল, নিউজ পোর্টাল ও সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে মোটামুটি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে জুবায়ের ও প্রতীকের প্রতিষ্ঠিত অল্টারনেটিভ নিউজ বা অল্টনিউজ।

২০১৮ সালের একটি টুইটের উল্লেখ করে ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছর জুনে জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করে ভারতের পুলিশ। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয় বিশ্বজুড়ে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বার্থ সংরক্ষণে কর্মরত অসংখ্য সংগঠন। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে বলেছে, জুবায়েরের গ্রেপ্তারের ঘটনা ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে আরেক দফা তলানিতে ঠেকিয়েছে। সম্প্রদায়গত ইস্যুগুলোর সংবাদ পরিবেশনে কর্মরতদের জন্য বৈরী ও অনিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ভারত সরকার।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মোহাম্মদ জুবায়ের ও প্রতীক সিনহাসহ মনোনয়ন পেয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ২৫১ জন ব্যক্তি ও ৯২টি সংগঠন। নরওয়ের একাধিক পার্লামেন্ট সদস্য, পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলো ও অন্যান্য সূত্রে বেরিয়ে এসেছে এবারের পুরস্কারের জন্য মনোনীত ৩৪৩ প্রার্থীর নাম।

নোবেল কমিটি গণমাধ্যম অথবা প্রার্থীদের কাছে মনোনীতদের নাম প্রকাশ করেন না। তবে রয়টার্সের জরিপে জানা গেছে, নরওয়ের আইনপ্রণেতারা এবার যাদের মনোনীত করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বেলারুশের রাজনীতিক সভিয়াতলানা সিখানুস্কায়া, ব্রডকাস্টার ডেভিড অ্যাটেনবরো, তুভালুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোফি, মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত এনএলডি সরকারসহ বেশ কিছু পরিচিত নাম।

এছাড়া জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক আলেক্সেই নাভালনির নামও রয়েছে।