ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেই চলেছে উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়া পূর্ব দিকে আবারও দুটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তিন দিনের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘটনা। বৃহস্পতিবারের (৬ অক্টোবর) এ উৎক্ষেপণের খবর দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস) ও জাপান সরকার। এর আগে গত মঙ্গলবার পিয়ংইয়ং জাপানের উপর দিয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। খবর আল জাজিরা।

বৃহস্পতিবার আবারো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া

এ বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সাংবাদিকদের বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে এই অল্প সময়ের মধ্যে ষষ্ঠবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। এটি আর সহ্য করা যাচ্ছে না।

জেসিএস জানায়, ২২ মিনিটের ব্যবধানে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি উৎক্ষেপণ করা হয়। উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছে কোনো স্থান থেকে এগুলো ছোড়া হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত হাওয়াসঙ-১২ মডেলের। পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে পারা এ ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়ামের মার্কিন অঞ্চলে পৌঁছাতে সক্ষম।

মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরল যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার পর হঠাৎ করেই মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান এবং তার সাথে থাকা স্ট্রাইক গ্রুপকে পুনরায় মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে মহড়া শেষে চলে যাওয়ার কথা ছিল এ রণতরীটির। কিন্তু গত মঙ্গলবারের ঘটনার পর সিউলের অনুরোধে এটি আবারো কোরীয় উপদ্বীপের জলসীমায় ফিরে আসে। এতে ক্ষুব্ধ হয় উত্তর কোরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে রণতরীটির এমন অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, এটি স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে। এরপরই উত্তর কোরিয়া এ প্রতিক্রিয়া দেখাল।

বৃহস্পতিবার নিক্ষেপ করা প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) উচ্চতায় ৩৫০ কিলোমিটার (২১৭ মাইল) রেঞ্জে এবং দ্বিতীয়টি ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) উচ্চতা, ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৭ মাইল) পরিসরে নিক্ষিপ্ত হয়।

অনিয়মিত গতিপথে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা বলেন, এ বছরের শুরু থেকে উত্তর কোরিয়া একতরফাভাবে তার উস্কানির মাত্রা বাড়িয়েছে।

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার নিক্ষেপ করা স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন নানা মডেলে ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে সেগুলোকে শনাক্ত করা বা বাধা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।

পিয়ংইয়ং এ বছর নজিরবিহীনভাবে প্রচুর সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ওয়াশিংটনের সাথে ভবিষ্যতের আলোচনায় নিজের পক্ষে দর কষাকষির সুযোগ বাড়াতে পিয়ংইয়ং এমন আচরণ করছে। একই লক্ষ্যে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে প্রথমবারের মতো পরমাণু অস্ত্রেরও পরীক্ষা চালাতে পারে কিম জং উনের দেশ।