ইউক্রেনকে গোপনে অস্ত্র দিচ্ছে পাকিস্তান!

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে মোটামুটি নিরপেক্ষ অবস্থানই বজায় রাখছে উপমহাদেশের দেশগুলো। এভাবেও বলা যায়, উভয় পক্ষের সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে সংঘাতকালীন সময়টা পার করতে চাইছে দেশগুলো। এরইমধ্যে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে পাকিস্তান।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ব্যবহার করা পাকিস্তানি গোলা

সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে জিও পলিটিক নামের একটি সংস্থা। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউক্রেন সেনাবাহিনীকে গোলাবারুদ সরবরাহ করছে পাকিস্তান। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যে ১২২ মিলিমিটার হাউৎজার গোলা নিক্ষেপ করছে, সেটা পাকিস্তানের তৈরি। পুতিন বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে হামলা চালাতে এই হাউৎজার কামানই জেলেনস্কি বাহিনীর অন্যতম প্রধান অস্ত্র।

তবে রাশিয়ার দৃষ্টি এড়াতে এসব গোলাবারুদ ইউক্রেনকে সরাসরি না দিয়ে তৃতীয় দেশের মাধ্যমে দিচ্ছে পাকিস্তান। এছাড়া, ইউক্রেনের একটি বিখ্যাত অস্ত্রনির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে ৮৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসলামাবাদ। চুক্তির অধীনে ইউক্রেনে নির্মিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর টি-৮০ ইউডি ট্যাঙ্ক আধুনিকীকরণ করা হবে।

এসব ট্যাংকে ব্যবহার হচ্ছে পাকিস্তানি গোলা

জিও পলিটিকের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বুলগেরিয়ার মেসার্স ডিফেন্স ইন্ড্রাস্ট্রি গ্রুপ নামের একটি অস্ত্রনির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে পাকিস্তানের অস্ত্র জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডিএমআই অ্যাসোসিয়েটসের যোগাযোগ রয়েছে। বুলগেরিয়ার এ সংস্থাটির মাধ্যমেই প্রধানত ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করছে ইসলামাবাদ। এ সংস্থার বাইরেও এমন বেশ কয়েকটি বিদেশি সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে কিয়েভকে অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে শাহবাজ শরিফের সরকার।

এছাড়া স্লোভাকিয়া-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা সংস্থা মেসার্স কেমিকা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাক অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির গোলাবারুদের প্রতিরক্ষা সরবরাহকারী মেসার্স কেস্ট্রালের সাথে যোগাযোগ রাখছে বলে এএনআইয়ের ওই খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে অনলাইন রাশিয়ান ওয়েব পোর্টাল রিয়াফানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য যুক্তরাজ্যের একটি মূল ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে রাওয়ালপিন্ডির পাকিস্তানের নূর খান বিমানঘাঁটি।

উল্লেখ্য, সাত মাসের বেশি সময় ধরে প্রবল যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। শুরুর দিকে রুশ হামলায় ইউক্রেন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গত মাস থেকে পাল্টা হামলা চালিয়ে সফলতা পাচ্ছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। রাশিয়ার দখল করা কিছু এলাকা পুনর্দখলও করেছে।