অভিবাসীর ঢলে নিউইয়র্কে জরুরি অবস্থা

অভিবাসীদের নিয়ে নতুন রাজনীতি শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির বিরোধীদল রিপাবলিকান শাসিত রাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষ ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটশাসিত রাজ্যগুলোতে বাস বোঝাই করে অভিবাসী-শরণার্থীদের পাঠিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েকমাস ধরে এমন অভিবাসীদের ঢল নেমেছে নিউইয়র্ক রাজ্যে। অভিবাসীদের এমন আগমনে সৃষ্ট সংকটের কারণে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি।

নিউইয়র্কে ঢুকছে একটি শরণার্থী পরিবার

নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহরগুলো থেকে গত এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১৭ হাজারের বেশি অভিবাসী নিউ ইয়র্কে এসেছেন। এসব অভিবাসী এসেছে মূলত  রিপাবলিকান শাসিত অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে।

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে নজিরবিহীন সংখ্যায় অভিবাসী জড়ো হওয়ার পর হোয়াইট হাউসের সঙ্গে রাজ্যগুলোর বিরোধ দেখা দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে রিপাবলিকান শাসিত অঙ্গরাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষ ডেমোক্রেটিক শাসিত অঙ্গরাজ্যে এসব অভিবাসীদের পাঠাচ্ছে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে চাপে ফেলতেই এমন পন্থা অবলম্বন করছে রিপাবলিকানরা।

এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে গড়ে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি বাস অভিবাসীদের নিয়ে নিউইয়র্কে আসছে। আগত অভিবাসীদের সঙ্গে রয়েছে স্কুলগামী শিশু।

মেয়র অ্যাডামস বলেন, অন্য রাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষ এসব অভিবাসীদের নিউইয়র্কে পাঠানোয় শহরের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। আমরা এমনটি চাইনি। হাজার হাজার শরণার্থীর দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে কারো সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়নি।

তিনি বলেন, এসব অভিবাসীদের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্পে ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে শহর কর্তৃপক্ষ। সহযোগিতার সামর্থ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে যাচ্ছি আমরা। অভিবাসীদের আগমনে এই অর্থবছরে নিউইয়র্ককে ১০০ কোটি ডলার বেশি ব্যয় করা লাগতে পারে।

মেয়র এরিক এই বাড়তি ব্যয় নির্বাহের জন্য কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্যের তহবিল থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। ওই আদেশের ফলে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীদের জন্য ব্যয় বাড়াতে পারবে শহর কর্তৃপক্ষ।

সীমান্তবর্তী শহরগুলোর রিপাবলিকান কর্মকর্তারা বলছেন, অভিবাসীদের প্রবাহ কমাতে টেক্সাস, আরিজোনা ও ফ্লোরিডা থেকে অভিবাসীদের ডেমোক্র্যাটিক শহরগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে অভিবাসীদের প্রবেশ কমাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগের অংশও এটি। কেননা, এই বছর অভিবাসীদের মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রমের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে।